তুরস্কে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে করোনার ভ্যাকসিন নিলেন ডা. ইউসুফ

রাকিব হাসান রাফি
রাকিব হাসান রাফি রাকিব হাসান রাফি , স্লোভেনিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২১

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো তুরস্কও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করেছে। গত ২৯ ডিসেম্বর চীনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাকে উৎপাদিত করোনা টিকার ৩০ লাখ ডোজের প্রথম চালান দেশটিতে এসে পৌঁছায়। এরই ধারবাহিকতায় বৃহস্পতিবার থেকে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করে ইউরোপ ও এশিয়ার সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এ দেশটি।

প্রাথমিক পর্যায়ে তুরস্কে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক এবং সিনিয়র সিটিজেনদের মাঝে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটির ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন প্রবাসী চিকিৎসক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ ইরাজ।

টিকা কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিনই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় তুরস্কের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সামসুনের অন্দোকুজ মাইস ইউনিভার্সিটির মেডিকেল সেন্টার থেকে এ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন তিনি।

এ বিষয়ে ডা. ইউসুফ জানান, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তুরস্কের ইতিহাসে করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারাটা সত্যি আমার জন্য গর্বের। একই সঙ্গে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি কেননা টিকা গ্রহণের পর আমার শরীরে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি এবং আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।

তিনি বলেন, পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধে তিনি বাংলাদেশ সরকারকেও অতি দ্রুত টিকা কার্যক্রম শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষত ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে তিনি বাড়তি সতর্কতার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

মো. আবু ইউসুফ ইরাজের জন্ম ১৯৯২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ শহরে। তার বাবার নাম মুসলিম উদ্দিন এবং মার নাম বদরুন্নাহার রিনা। বাবা পেশায় সোনালি ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার। ইউসুফ ইরাজ ২০০৬ সালে গোল্ডেন এ প্লাসসহ কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি. এবং ২০০৮ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচ.এস.সি. পাশ করেন।

এরপর তিনি ২০০৯-২০১০ সেশনে ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স সম্পন্ন করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ২০১১ সালে তিনি তুরস্ক সরকারের শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হন এবং ডক্টর অব মেডিসিন (এমডি) স্টুডেন্ট হিসেবে সামসুনের অন্দোকুজ মাইস ইউনিভার্সিটিতে পাড়ি জমান।

প্রায় আট বছর পড়াশোনা শেষে ২০২০ সালে তিনি এমডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এর মধ্যে এক বছর তিনি তার্কিশ এবং আরও এক বছর ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে অন্দোকুজ মাইস ইউনিভার্সিটির মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত।

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]