সফলতার জন্য পরিশ্রম ও দোয়া

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০১ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সফলতার জন্য পরিশ্রম ও দোয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাদিয়া সুলতানা বুশরা

জীবনে সফল হতে চাইলে চেষ্টা ও পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা করা, আর সফলতা দান করার মালিক আল্লাহ তাআলা। কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, মানুষ তাই পায়, যা সে করে। (সুরা আন-নাজম: ৩৯)

এ আয়াত আমাদেরকে শেখায়, শুধু আশা করে বসে থাকলেই হবে না, বরং সাফল্যের জন্য নিরন্তর চেষ্টা করতে হবে। কেউ যদি ব্যর্থতার ভয় পেয়ে চেষ্টাই না করে, তাহলে সে কখনোই সফলতার মুখ দেখবে না।

কোরআনের আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। (সুরা রা’দ: ১১)

অর্থাৎ মানুষ যখন নিজের অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করে, আল্লাহ তাআলা তাকে চেষ্টার ফল দান করেন। মানুষ যদি নিজের অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টাই না করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার অবস্থা পরিবর্তন করেন না।

কোনো কাজে এক দুইবারের চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও হতাশ না হয়ে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সফলতা যেমন আনন্দের, ব্যর্থতা তেমনি শিক্ষার। আমরা অনেক সময় সামান্য চেষ্টায় সফলতা না পেলে হতাশ হয়ে যাই। অথচ, বারবার চেষ্টা, আত্মসমালোচনা এবং ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণই আমাদেরকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যায়। ব্যর্থতার পেছনে অনেক সময় আমাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং ভীরু মানসিকতা দায়ী থাকে।

ইতিহাসের যে মহান বা সফল ব্যক্তিদের আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মানের চোখে দেখি, তারা সবাই জন্মগতভাবে প্রতিভাবান ছিলেন না, কিন্তু সবাই প্রচণ্ড পরিশ্রমী ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিল দৃঢ় সংকল্প, অধ্যবসায়, এবং এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা। অনেকের পরিবার বা আর্থ-সামাজিক অবস্থান ছিল সাধারণ, কিন্তু চেষ্টা আর পরিশ্রমই তাদের উচ্চস্থানে পৌঁছে দিয়েছে।

যথাসাধ্য চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহ তাআলার কাছে সাহায্য চাওয়াও জরুরি। আল্লাহ তাআলার সাহায্য ছাড়া কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য আসে। দোয়ার মাধ্যমে ভাগ্য বা তকদিরও বদলে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, দোয়া ছাড়া কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না, আর নেক আমল ছাড়া কিছুই হায়াত বাড়াতে পারে না। (সুনানে তিরমিজি)

মুমিন আল্লাহ তাআলার কাছে যে কল্যাণকর দোয়া করে, তা কখনও ব্যর্থ হয় না। দোয়ার বদলা আল্লাহ তাআলা অবশ্যই দান করেন। তবে বিভিন্ন সময় দোয়ার প্রতিদান বিভিন্ন রকম হয়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যখন কোনো মুমিন ব্যক্তি এমন দোয়া করে যে দোয়াতে কোনো পাপ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় নেই, তাহলে আল্লাহ তিন পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে তার দোয়া কবুল করে নেন; হয়তো যে দোয়া সে করেছে তা ওইভাবেই কবুল করেন, তার দোয়ার প্রতিদান আখেরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন অথবা এ দোয়ার মাধ্যমে তার ওপর আগত কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন।

এ কথা শুনে সাহাবিরা বললেন, আমরা তাহলে অধিক পরিমাণে দোয়া করতে থাকবো। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা যত দোয়াই করবে আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি কবুল করতে পারেন। (বুখারি ফিল আদাবিল মুফরাদ)

ওএফএফ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।