সাধারণ থেকে ‘অসাধারণ’ হয়ে ওঠা ডা. রোকেয়া সুলতানা
দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ডা. রোকেয়া সুলতানা। আওয়ামী লীগের অনেক চিকিৎসক নেতাকে পেছনে ফেলে গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি ‘উপহার’ পেয়েছেন তিনি। বিদায়ী স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলুর স্থলাভিষিক্ত হলেন ডা. রোকেয়া সুলতানা।
চিকিৎসক নেতাদের অনেকেরই ভাবনার বাইরে ছিলেন ডা. রোকেয়া সুলতানার স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার বিষয়টি। আওয়ামী লীগের মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ এ পদ পাওয়ার নেপথ্যে কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একজন নিবেদিত চিকিৎসক কর্মী ও নেতা হিসেবে গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে নিরলস পরিশ্রম করেছেন ডা. রোকেয়া সুলতানা।
জানা গেছে, অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই চিকিৎসক নেত্রী আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার সময় প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে যেমন তৎপর ছিলেন, তেমনি দল ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেত্রী হিসেবে তার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
বিএমএ ও স্বাচিপের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. রোকেয়া সুলতানাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে ডা. রোকেয়া সুলতানার গত দুই যুগের বেশি সময় নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে নিয়োগ লাভের পর জাগো নিউজকে ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুস্থ ও দারিদ্র্যতা দূর করে বাঙালি জাতিকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছেন। তৃণমূল পর্যায়ের দুস্থ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই হবে মূল লক্ষ্য।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান ডা. রোকেয়া সুলতানাকে অভিনন্দন জানিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, বহু বছর ধরে পেশাজীবীদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে যুক্ত থাকায় ডা. রোকেয়া সুলতানাকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। চিকিৎসকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন ও সংগ্রামে তিনি উপস্থিত থাকতেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে নিয়োগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ডা. রোকেয়া সুলতানাকে অভিনন্দন জানান।
ডা. রোকেয়া সুলতানা রংপুর মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্রী। ১৯৭৮ সালে এমবিবিএস পাস করে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। অ্যানেসথেসিওলজিস্ট হিসেবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে অবসরে যান তিনি।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মাহতাবউদ্দিনের সন্তান ডা. রোকেয়া সুলতানা। বর্তমানে তিনি স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিএমএর (রংপুর বিভাগ) সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) কোষাধ্যক্ষ পদে আছেন। এছাড়া তার স্বামী প্রফেসর আবদুল হামিদ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক।
এমইউ/আরএস/এবিএস