ভাড়াটিয়ার তথ্য চাওয়া সংক্রান্ত রিটের আদেশ রোববার
পুলিশ কর্তৃক রাজধানীর ভাড়াটিয়াদের তথ্য চাওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে করা রিট আবেদনের শুনানি শেষ করেছেন আইনজীবীরা। আগামী ১৩ মার্চ রোববার ওই রিট আবেদনের ওপর রায় ঘোষণা করার হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া।
রিট আবেদনের ওপর সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দিন শুনানি শেষে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া, সঙ্গে ছিলেন সু প্রকাশ দত্ত্ব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। অপরদিকে আইনি বিষেয়ে শুনানি করেন অনিক আর হক ও হাসনাত কাইয়ুম।
পরে জ্যোর্তিময় বড়ূয়া বলেন, আজকে মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। আদেশের জন্য আগামী রোববার (১৩ মার্চ) দিন ঠিক করেছেন আদালত। গত ২ মার্চ দুপুরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রিটে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিপি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিট পুলিশিং নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদমাধ্যম কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ১৫ মার্চের মধ্যে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। রাজধানীর সব বাসায় ফরম পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে অনেক ফরম ফেরত পেয়েছে, অনেক ফরম পায়নি। যা ১৫ মার্চের মধ্যে শেষ হবে। পরে তা ব্যাকআপের কাজ শুরু হবে।
তার আগে গত ৩ মার্চ ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। এর আগে গত ১ মার্চ ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম থেকে পুলিশকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান এই আইনজীবী।
বাড়িওয়ালাদের মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টাদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন তিনি।
পরে আইনজীবী জোতির্ময় বড়ুয়া নিজেই সাংবাদিকদের জানান, ১ মার্চ রেজিস্ট্রি ডাক যোগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিগ্যাল নোটিশের জবাব না দেওয়ায় রিট করা হয়েছে।
আইনজীবী জোতির্ময় বড়ূয়া বলেন, ভাড়টিয়ার কাছে অসংখ্য তথ্য চাওয়া হয়েছে যা কোনো আদালত বা আইনে নেই। এটা উচিত না।
তিনি বলেন, সেখানে একজনের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার আত্মীয়-স্বজন ও বাড়িতে আসা মেহমানের তথ্য চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ন্যাশনাল আইডির সঙ্গে পাসপোর্ট আইডি এসবের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ সকল তথ্যে নিয়ে কি পুলিশ কি করবে এবং একজন ব্যক্তির তথ্য সংরক্ষণ করতে পারবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
তিনি আরো বলেন, এসব ব্যক্তিগত তথ্যের মাধ্যমে পুলিশ কারো বিরুদ্ধে নিজের দোষ অন্যের উপর চাপিয়ে দিয়ে ‘নিজের স্বার্থ’ হাসিল করতে পারে। যেহেতু তারা জনগণের তথ্য কিভাবে সংরক্ষণ করতে হয় এবং কিভাবে একজন ব্যক্তির মর্যাদা ও সম্পদের তথ্য সংরক্ষণ করতে হয় তা জানে না তাই আমি ব্যাক্তিগত ভাবে এ বিষয়ে জনস্বার্থে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য ফরম পূরণ করে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এফএইচ/এসএইচএস/এবিএস