বাইক বা গাড়ির ‘আরপিএম’ আসলে কী জানেন?

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
বাইক বা গাড়ির ‘আরপিএম’

 

বাইক বা গাড়ির ড্যাশবোর্ডে আপনি একটি ঘূর্ণায়মান মিটার লক্ষ্য করে থাকবেন, যেখানে লেখা থাকে আরপিএম। অনেকেই এই শব্দটি শোনেন কিন্তু ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেন না এর অর্থ। আসলে আরপিএম বা রেভিলিউশনস পার মিনিট হলো প্রতি মিনিটে ইঞ্জিনের ক্র্যাঙ্কশ্যাফ্ট কতবার ঘুরছে তার হিসাব। সহজ করে বললে আপনার ইঞ্জিন প্রতি মিনিটে কত জোরে কাজ করছে তার একটি পরিমাপই হলো আরপিএম। ইঞ্জিনের গতি, টর্ক, শক্তি উৎপাদন সব কিছুই নির্ভর করে আরপিএম এর ওপর।

ইঞ্জিন স্টার্ট করলে আরপিএম সাধারণত ৮০০ থেকে ১২০০ এর মধ্যে থাকে, যেটাকে ‘আইডল আরপিএম’ বলা হয়। আপনি যখন অ্যাক্সেলেটর চাপেন, তখন জ্বালানি ও বাতাসের প্রবাহ বাড়ে, দহন প্রক্রিয়া দ্রুত হয় এবং আরপিএম বেড়ে যায়। আরপিএম যত বাড়ে ইঞ্জিন তত বেশি শক্তি তৈরি করে, ফলে বাইক বা গাড়ির গতি বাড়ে।

তবে আরপিএম খুব বেশি বাড়লে ইঞ্জিনের ওপরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, তাপমাত্রা বাড়ে এবং ক্ষয় বেশি হয়। তাই ড্যাশবোর্ডে লাল রঙে একটি জোন থাকে এটিকে ‘রেডলাইন’ বলে। এই সীমা অতিক্রম করা ইঞ্জিনের জন্য বিপজ্জনক।

গিয়ার পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও আরপিএম-এর বড় ভূমিকা আছে। কম আরপিএম-এ ভারী গিয়ারে চললে ইঞ্জিন নকিং হতে পারে, আর বেশি আরপিএম-এ গিয়ার না বদলালে জ্বালানি নষ্ট হয় এবং ইঞ্জিনের ক্ষতি বাড়ে। অভিজ্ঞ রাইডার বা ড্রাইভাররা তাই আরপিএম দেখে ঠিক সময়ে গিয়ার বদলান, যাতে ইঞ্জিনের উপর চাপ না পড়ে এবং স্মুথ পারফরম্যান্স বজায় থাকে।

নতুন মডেলের অনেক গাড়িতে ট্যাকোমিটার বা আরপিএম মিটার না থাকলেও সফটওয়্যার ভিত্তিক ড্রাইভিং অ্যাসিস্ট ফিচারের মাধ্যমে গিয়ার শিফট সাজেশন দেওয়া হয়, যেখানে আরপিএম-এর ডাটাই মূলত ব্যবহার করা হয়।

সঠিক আরপিএম ধরে চালালে জ্বালানি সাশ্রয়ও হয়। ইঞ্জিন সাধারণত মাঝারি আরপিএম-এ সবচেয়ে বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে, যাকে ‘পাওয়ার ব্যান্ড’ বলা হয়। এই সীমার মধ্যে গতিবেগ বাড়ালে গাড়ি কম জ্বালানিতে বেশি দূর যেতে পারে। অন্যদিকে হঠাৎ বেশি আরপিএম-এ অ্যাক্সেলেট করলে জ্বালানি দ্রুত পুড়ে যায় এবং ইঞ্জিনের আয়ুও কমতে থাকে। তাই ইঞ্জিনের দীর্ঘায়ু ও সঠিক পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে আরপিএম-এর ব্যবহার বুঝে ড্রাইভ করা খুবই জরুরি।

অর্থাৎ, আরপিএম কেবল একটি সংখ্যা নয় আপনার গাড়ি বা বাইকের স্বাস্থ্যের প্রধান নির্দেশক। আরপিএম বোঝার মাধ্যমে আপনি আরও সচেতনভাবে ড্রাইভ করতে পারবেন, ইঞ্জিনকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন, এবং জ্বালানি খরচও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন। নিয়মিত সার্ভিসিং, সঠিক গিয়ার বদল এবং আরপিএম-এর সঠিক ব্যবহারই আপনার বাহনকে দীর্ঘদিন ভালো রাখবে।

আরও পড়ুন
বৃষ্টিতে বাইকের সাইলেন্সারে পানি ঢুকলে কী করবেন?
বাইকের ‘এবিএস সিস্টেম’ আসলে কী জানেন?

সূত্র: অটোকার ইন্ডিয়া

কেএসকে/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।