ছুটির বিকেলে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিল

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২৮ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

রাজধানীর পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী ইসলামপুরের কুমারটুলী এলাকায় মাথা উঁচু করে স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে নবাবদের তৈরি ১৫০ বছরেরও বেশি পুরোনো আহসান মঞ্জিল।

শেখ এনায়েত উল্লাহর তৈরি প্রমোদভবনটি একসময় নবাবদের আবাসিক ভবন ও জমিদারদের সদর কাচারি হিসেবে চালু থাকলেও বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: বান্দরবান ভ্রমণে ঘুরে দেখবেন যেসব স্পট

১৮৫৯ সালে নওয়াব আব্দুল গনি এটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন ও ১৮৭২ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। প্রাণপ্রিয় পুত্র খাজা আহসান উল্লাহর নামে এর নামকরণ করা হয় ‘আহসান মঞ্জিল’।

আহসান মঞ্জিল দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথমভাগে মূল ভবন ও অন্যটি অন্দরমহল যা দ্বিতলা বিশিষ্ট। এক সময় মূল ভবন ও অন্দরমহলের মাঝে সংযোগ সেতু থাকলেও বর্তমানে এটি অচল ও বেহালদশায় পড়ে আছে।

মূল ভবনের নিচতলায় আছে ১০ রুম ও উপরের তলায় ১৪ রুম। নিচ তলায় মধ্যে উনবিংশ শতাব্দীর সৈনিকদের বর্ম, নবাবদের ব্যবহৃত ধাতব, পিতল, সিরামিক ও চীনামাটির তৈরি নানা ধরনের আসবাবপত্র।

আরও পড়ুন: শত বাঁধা পেরিয়ে দেশের ৬৪ জেলা ঘুরলেন আয়াতুল্লাহ

আরও আছে ফানুস, জগদান, ফলপাত্র, আতরদান; বক্ষণাস্ত্র, শিরণাস্ত্র, দাঁতসহ হাতির মাথার কঙ্কাল, মুসলিম লীগ হল, বিলিয়ার্ড টেবিল, বক্স, ভল্টসহ দৈত্যাকার আলমারি ও সিন্ধুক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

দ্বিতীয় তলায় ওঠার জন্য লাল গলিচায় আবৃত কাঠের প্রধান সিড়িটি বর্তমানে বন্ধ আছে। ১০ নং রুম দিয়ে দোতলায় উঠার জন্য পাকা সিঁড়ি আছে।

দোতলায় আছে মাওলানা আকরাম খাঁ, এ.কে ফজলুল হল, হরপ্রসাধ শাস্ত্রী, বিপিন চন্দ্র পাল, সৈয়দ আমীর আলী, হাজী মুহাম্মদ মহসিন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বেগম রোকেয়া, কাজী নজরুল ইসলাম, হাছন রাজা, জগদীশ চন্দ্র নসু, দীন বন্ধু মিত্র, প্যারিচাঁদ মিত্র প্রমুখ বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের প্রতিকৃতি।

আরও পড়ুন: ছুটির দিনে ঘুরে আসুন ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে

এছাড়া আছে নবাবদের ব্যবহৃত হাতির দাঁতের হাতপাখা, পাশার ঘুটি, সাদা সিমেন্টের তৈরি ভাস্কর্য, লাইব্রেরি কক্ষ, টাইপ মেশিন পানিশোধন যন্ত্র, বৈদ্যুতিক হিটার, বৈদ্যুতিক মিটার, ঝাড়বাতি, প্রাসাদ ড্রইিং রুম, দর্শনার্থী বিশ্রামাগার, বলরুম নাচঘর, দৈত্যাকার হল গ্রান্ড পিয়ানো, ক্রিষ্টাল টেবিল, ঘোড়ার হাতল বিশিষ্ট চেয়ার, গুপ্ত স্থানে যাওয়ার জন্য দুটো সিঁড়ি।

আহসান মঞ্জিলকে ঢাকা শহরের প্রথম ইট-পাথরের তৈরি স্থাপত্য নিদর্শন মনে করা হয়। তৎকালীন নবাবদের হাতে এই ভবনেই সর্বপ্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠে। একসময় ঢাকা শহরের সবচেয়ে উঁচু গম্বুজ ছিল আহসান মঞ্জিলের প্রাসাদের ছাদের ওপরের সুন্দর গম্বুজটি।

আহসান মঞ্জিলের অন্দরমহলে আছে অফিস, ঘোড়ার গাড়িতে সলিমুল্লাহর ভাস্কর্য, নওয়াবদের, মোটরযান (ডিওরোমা), নওয়াবদের বজরা, স্টিমার, প্রভাবশালী কর্মচারীদের প্রতিকৃতি, শয়নকক্ষ ও হাম্মামখানা, ইমারজেন্সি সিঁড়ি।

আরও পড়ুন: কম খরচে আসাম ভ্রমণে যা কিছু ঘুরে দেখবেন

এছাড়া আহসান মঞ্জিলে আছে বিশাল বাগান, ফুল ও ফল গাছ, দোতলা থেকে নামার জন্য দৈত্যাকার সিঁড়ি যা ফটোগ্রাফিপ্রেমী দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু, প্রবেশ পথে রয়েছে দর্শনার্থীদের ব্যাগ রাখার সুব্যবস্থা।

আহসান মঞ্জিলে যেতে ঢাকার সদরঘাটগামী যে কোনো বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে নেমে যেতে হবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে কিংবা ৩০ টাকা রিকশা ভাড়ায় আহসান মঞ্জিল যেতে পারবেন।

অথবা ঢাকার যে কোনো জায়গা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত এসে রিকশা অথবা সিএনজি নিয়ে সদরঘাট হয়ে আহসান মঞ্জিল দেখতে যেতে পারেন।

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।