বরিশালে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ১১০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই


প্রকাশিত: ১১:২২ এএম, ০২ মার্চ ২০১৬

বরিশাল নগরীতে এক জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে গুলি করে ১১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাইয়ের প্রায় ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। তবে বুধবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা চার ছিনতাইকারীকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন গুলিতে আহত ব্যবসায়ী মিরাজুল হকের ভাই সিরাজুল হক।

প্রতক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবর রাত পৌনে ১০টার দিকে নগরীর বগুড়া সড়ক ও গোড়াচাঁদ দাস সড়কের সংযোগ দিনবন্ধু সেন সড়কে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের প্রধান ফটকের সামনে ফিল্মি স্টাইলে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীদের গুলিতে আহত মিরাজুল হক নগরীর হেমায়েতউদ্দিন সড়কের হক জুয়েলার্সের মালিক আলহাজ্ব মোজাম্মেল হকের ছেলে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক সুপরিচিত স্বর্ণলঙ্কার ব্যবসায়ী।  

গুলিবিদ্ধ মিরাজুল হক শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছিনতাই হওয়া স্বর্ণের মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা বলে ব্যববসায়ীর পরিবার জানিয়েছেন।

কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আনছার উদ্দিন শুভ জাগো নিউজকে জানান, মঙ্গলবার রাতে মিরাজুল ইসলাম তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাগভর্তি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ইজিবাইকে বাবা ও ভাইসহ বাসায় ফিরছিলেন। বাসার অদূরে পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে ছিনতাইকারীরা ইজিবাইকের গতিরোধ করে স্বর্ণালঙ্কার ভর্তি ব্যাগ নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিলে ছিনতাইকারীরা মিরাজের পায়ে গুলি করে। ছিনতাই সম্পন্ন হয় ২/৩ মিনিটের মধ্যে।

ধারণা করা হচ্ছে, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং ছিনতাইকারীরা হক জুয়েলারি থেকে বের হওয়ার পর থেকে মিরাজদের বহনকারী ইজিবাইক অনুসরণ করছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন সংলগ্ন সড়কটি নির্জন স্থান হওয়ায় সেখানে আক্রমণ করে ছিনতাইকারীরা।

ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা সড়কের উপর গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির রক্ত পড়ে থাকতে দেখেছেন। ছিনতাইয়ের পর পরই নগরীর সবগুলো পয়েন্টে চেক পয়েন্ট বসিয়ে মোটরসাইকেলগুলোতে তল্লাসী চালানো হয়। বুধবার দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

গুলিবিদ্ধ মিরাজ জানান, হেমায়েত উদ্দিন সড়কে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পুরাতন ভবন ভেঙে সেখানে বহুতল নির্মাণ করছে ভবনের মালিক পক্ষ আছমত আলী খান ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। নির্মাণাধীন ভবনের সামনে অস্থায়ী আধাপাকা ঘরে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রেখেছেন। প্রতিদিন রাতে দোকানের যাবতীয় স্বর্ণালঙ্কার ব্যাগে করে বাসায় নিয়ে যান। মঙ্গলবার রাতে তিনিসহ (মিরাজ) তার বাবা মোজাম্মেল হক ও ভাই সিরাজুল হক ইজিবাইকে বাসায় ফিরছিলেন। স্বর্ণালঙ্কারের ব্যাগটি ছিল সিরাজুলের হাতে। বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের প্রধান ফটক অতিক্রম করার পর পরই পিছন থেকে কয়েকজন যুবক একটি মোটরসাইকেলে এসে ইজিবাইকটিকে ধাক্কা দেয় এবং চালককে ধমক দিয়ে সামনে চলে আসে। একই সময়ে সামনের দিক থেকে দুই যুবক আরোহী অপর একটি মোটরসাইকেলে এসে সেখানে থামে। দুটি মোটরসাইকেলে পাঁচ যুবকের মধ্যে দু`জনের হাতে পিস্তল ছিল। তারা স্বর্ণালঙ্কারের ব্যাগটি টান দিলে মিরাজুল বাঁধা দেন। এসময় এক যুবক তার পায়ে গুলি করেন এবং ব্যাগসহ ছিনতাইকারীরা দুটি মোটরসাইকেল গোড়াচাঁদা দাস রোডের দিকে চলে যান।

ছিনতাইয়ের এ ঘটনা কাছেই দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করে ওই এলাকার বাসিন্দা নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সজিব ও শিহাব। তারা বলেন, প্রথমে একটি মোটরসাইকেল এসে ইজিবাইকটিকে ধাক্কা দেয়। একই সময়ে বিপরীত থেকে আরও একটি মোটরসাইকেলে পাঁচ যুবক একটি ব্যাগ নিয়ে টানা হেচরা করতে থাকেন। এসময় দুজনের হাতে পিস্তল ছিল। ছিনতাইকারীরা চলে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন।

গুলিবিদ্ধ মিরাজের ভাই এনামুল হক জাগো নিউজকে জানান, বুধবার দুপুর ২টার দিকে অজ্ঞাতনামা চার ছিনতাইকারীকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বাদী হয়েছেন অপর ভাই সিরাজুল হক।

সাইফ আমীন/এমজেড/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।