জাবিতে ধর্ষণকাণ্ড

আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৯:১৩ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

গৃহবধুকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শাস্তির বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এসে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম। পরে নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের সহায়তায় গাড়িতে করে স্থান ত্যাগ করেন তিনি। উপাচার্যের এ আচরণের কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে সিন্ডিকেটের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত উপাচার্য ভবনের নিচে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জানাতে আসলে এ অবস্থার মুখে পড়েন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুরুতে উপাচার্য জানান সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তগুলো পড়ে শোনাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। তবে শিক্ষার্থীরা তা মানতে রাজি হয়নি। এতে বেশ হট্টগোল সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে উপচার্যকে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ারও আহ্বান জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

jagonews24

অবশেষে দাবির মুখে সিদ্ধান্ত পড়তে বাধ্য হন উপার্চায। তবে শিক্ষার্থী এবং এবং সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিবেন না বলে জানান তিনি। এতে শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

সিদ্ধান্তগুলো পড়ে শোনানো হলে শিক্ষার্থীরা আপত্তি তোলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা শাস্তি পেলেও অভিযুক্তদের পালানোর সুযোগ করে দিয়ে হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডিকে কোনো শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটিকেও একপাক্ষিক বলে আপত্তি তোলেন তারা। এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১৫ দিন ধার্য করা হলেও তা পাঁচ দিন করার দাবি জানান ।

এদিকে শিক্ষকতার প্রলোভনে একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে অভিযুক্ত পাবলিক হেল্থ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিষয়ে উপাচার্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এসময় উপার্চায শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে স্থানত্যাগ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা উপার্চার্যকে ঘিরে ধরেন। বেশ কয়েক মিনিট ধরে এ অবস্থা চলতে থাকে। পরে নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের সহায়তায় গাড়িতে পৌছান উপাচার্য।

jagonews24

এদিকে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা বলেন, আমাদের একজন বোন ধর্ষিত হলো। নিপীড়কেরা হল থেকে পালিয়ে গেল। কিন্তু যাদের সহায়তায় তারা পালালো এ সিন্ডিকেটে তাদের কোনো বিচার করা হয়নি। হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল টিমের কোন বিচার আমরা দেখলাম না।

এসময় আরও প্রতিক্রিয়া জানান, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক আনিছা পারভীন, ফামের্সি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনকারীরা জানান, আগামীকাল আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি জানানো হবে।

মাহবুব সরদার/এনআইবি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।