৩০ ফুট গভীরে নলকূপ, সিঁড়ি বেয়ে সংগ্রহ করতে হয় পানি

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের একটি গ্রাম ঘেরামারা আজিজনগর। গ্রামটির পূর্ব পাশে তিন শতাধিক মানুষের বসবাস। অথচ গ্রামের ৫০টি পরিবারের জন্য রয়েছে মাত্র একটি নলকূপ। সাত বছর আগে ৩০ ফুট গভীরে বসানো হয় নলকূপটি। ৩০০ মানুষের পানির জন্য ভরসা এই একটিমাত্র নলকূপ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘেরামারা আজিজনগর একটি পাহাড়ি গ্রাম। গ্রামে কোনো পুকুর বা নলকূপ নেই। সাত বছর আগে ওই গ্রামে বসতি শুরু করা মাফিয়া বেগম বেসরকারি সংস্থা ‘আশা’ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি নলকূপ বসান। পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় প্রথমে পানি পাননি। পরে ৩০ ফুট মাটি খুঁড়ে সেখানে বানানো হয় নলকূপ। তবে নলকূপটি দিয়ে সেভাবে পানি ওঠে না।
সম্প্রতি আজিজনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ ফুট গভীরে স্থাপন করা নলকূপ দিয়ে পানি তোলার জন্য মাটি ও পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১৮টি সিঁড়ি। সেই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে পানি সংগ্রহ করে আবার সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হয়। এজন্য অনেকে ভয়ে পানি সংগ্রহ করতে আসেন না।
সেখানে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ও নলকূপটি স্থাপনকারী পরিবারের সদস্য মাফিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঋণ নিয়ে নলকূপটি বসিয়েছি। প্রথমে অনেক কষ্ট করেও পানি পাওয়া যায়নি। পরে মাটি খুঁড়ে কুয়া তৈরি করে নলকূপটি স্থাপন করা হয়। তারপরও শুষ্ক মৌসুমে আশানুরূপ পানি পাওয়া যায় না। আবার বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে নলকূপ। পানির জন্য আমাদের কষ্টের শেষ নেই।’
পানি নিতে আসা পঞ্চাশোর্ধ্ব রাবেয়া খাতুন বলেন, আমাদের গ্রামটি পাহাড়ি এলাকায় হলেও কোনো বিচ্ছিন্ন জনপদ নয়। তবু এখানে কোনো ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছায় না। চলাচলের ভালো রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানি সংকট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানার পর এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। খুব শিগগির পানি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, পানি সংকটের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসআর/জিকেএস