ঈদের নামাজের জন্য প্রস্তুত এশিয়ার বৃহত্তম গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দান
দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঈদের নামাজ পড়তে আসেন লাখো মানুষ। এটি দেশের সর্ববৃহৎ জামায়াতের সুনাম অর্জন করেছে। ঈদের জামাতকে ঘিরে এখানে সৌহার্দ্যের পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ঈদের নামাজের জন্য ময়দানের সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। ঈদের দিন সকাল ৯টায় জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে। এবার ইমামতি করবেন মাওলানা মো. মাহফুজুর রহমান। তিনি মাদরাসা আননুজুম’র প্রধান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে এই ঈদগাহে মিনার তৈরির পর দেশের তথা এশিয়ার বৃহত্তম ঈদগাহ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দান। গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দানের আয়তন ১৯.৯৯ একর। ঈদগাহ ময়দানের পশ্চিমে লাল খয়েরি আর সাদা রঙের মিশ্রণে নির্মিত মিনারটির সৌন্দর্য সহজেই সবার নজর কাড়ে।
জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, এবারও সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসল্লির নামাজ আদায়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদের দিন সকাল নয়টায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পূর্ব পশ্চিমে ১১০০ ফিট ও উত্তর-দক্ষিণের পশ্চিমাংশে ৯১৬ ফিট এবং পূর্ব দিকে উত্তর দক্ষিণে ১০৩০ ফিট এই ময়দানে এবার ১৯২টি কাতারের জন্য চুন দিয়ে দাগ টানা হয়েছে। একটি কাতারে ৫ থেকে ৬০০ মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ময়দানটি যদি পুরোপুরি ভরে তাহলে লক্ষাধিক মুসুল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

শনিবার (২৯ মার্চ) মাঠ ঘুরে দেখা যায়, দেড় শতাধিক শ্রমিক মিনার ধোয়ামোছা ও মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। মাঠের চারপাশে ১৭টি প্রবেশপথ, তিনটি ওয়াচ টাওয়ার ও গাড়ি পার্কিংয়ের কাজ চলছে।
স্থানীয়রা বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে ছোট পরিসরে এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১৫ সালে সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম এই মাঠে ঈদগাহ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। ঈদগাহ মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছে মোগল স্থাপত্য রীতিতে। ৫২ গম্বুজ বিশিষ্ট ঈদগাহ মিনারের দুই প্রান্তে দুটি মিনারের উচ্চতা ৬০ ফুট। মাঝের দুটির উচ্চতা ৫০ ফুট। টাইলস করা মেহেরাবের উচ্চতা ৪৭ ফুট। এতে খিলান আছে ৩২টি। প্রতিটি গম্বুজে আছে বৈদ্যুতিক বাতি।
মাঠ পরিদর্শনে করে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গোর-এ শহীদ ময়দান ঈদের নামাজের জন্য প্রস্তুত। এরইমধ্যে আমরা একাধিক মিটিং করেছি। আশা করছি সর্বোচ্চ উপস্থিতির মধ্য দিয়ে এবার ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন বলেন, এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সাড়ে ৩০০ পুলিশসহ র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। মাঠের প্রস্তুতি চমৎকার রয়েছে। জেলা প্রশাসকসহ আমরা শুক্রবার বিকেলে মাঠ পরিদর্শন করেছি।
এমদাদুল হক মিলন/এফএ/এএসএম