চারজনের ব্যবসা, টাকা-কাগজপত্র নিয়ে উধাও দুজন
বগুড়ার শাজাহানপুরে ব্যবসার পার্টনারসহ বিভিন্ন জনের প্রায় ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে হুমায়ন কবীর (৫২) ও মেহেদী হাসান রনি (২৯) নামে দুই ব্যক্তি উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা সম্পর্কে বাবা-ছেলে।
এ ঘটনায় (১২ এপ্রিল) শনিবার মেহেদী হাসান (২৫) নামে তাদের ব্যবসার পার্টনার বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। তিনি উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের কাঁটাবাড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। অভিযুক্তরা একই ইউনিয়নের রহিমাবাদ সি-ব্লক এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাদী মেহেদী হাসান ও তার প্রতিবেশী নুর মোহম্মদ রোকন (২৬) ২০১৯ সাল থেকে অভিযুক্ত হুমায়ন ও রনির সঙ্গে উপজেলার রহিমাবাদ সি-ব্লক এলাকার বাজারে একত্রে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা করতেন। দীর্ঘদিন এক সঙ্গে ব্যবসার কারণে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিশ্বস্ততার কারণে মেহেদী হাসান ও নুর মোহম্মদের ব্যাংকের চেক বই, জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ড্রয়ারে থাকতো। গত ২৩ মার্চ সকালে মেহেদী ও নুর মোহম্মদ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখতে পান দোকানে তালা লাগানো। পরে হুমায়ন ও রনির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পান। বাড়িতে গিয়ে দেখেন বাড়িঘরে তালা লাগিয়ে পরিবারসহ উধাও। রনির শ্বশুড়বাড়ি টেকুড়গাড়িতে খোঁজ নিয়েও তাদের কোনো হদিস মেলেনি।
ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান ও নুর মোহম্মদ রোকন জানান, দীর্ঘদিনের ব্যবসায় বিনিয়োগ করা মেহেদীর ১১ লাখ ও নুর মোহম্মদের ১৪ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এছাড়া তাদের ব্যাংকের চেক ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ব্যবসার লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে নেওয়া ৫০ লাখের বেশি টাকা নিয়ে গেছে তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হুমায়ন কবীর ও মেহেদী হাসান রনির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
পরে রনির স্ত্রীর বড় ভাই জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার নিজেরও সাড়ে ৬ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। অভাবী সংসারের কাঁচা তরিতরকারির ব্যবসা করে জমানো টাকা হারিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সব জায়গায় খোঁজ করেও হুমায়ুন-রনিকে পাওয়া যাচ্ছে না।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াদুদ আলম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তাদের লোকেশন ট্র্যাক করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু ফোন বন্ধ থাকায় লোকেশন ট্র্যাক করা যাচ্ছে না। তবে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এমএন/জিকেএস