পরিবারে শোকের মাতম
পাকিস্তানে সেনা অভিযানে নিহত বাংলাদেশি তরুণের পরিচয় মিলেছে
যাওয়ার কথা ছিল দুবাই। কিন্তু সেখানে না গিয়ে যান পাকিস্তানে। সেখানে গিয়ে যোগ দেন নিষিদ্ধ সংগঠন ‘তেহরিক-ই তালিবান’-এ। পরে এই সংগঠনের হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে সেখানকার সেনাবাহিনীর হাতে গুলিতে নিহত হন ফয়সাল মোড়ল (২১)।
নিহত ফয়সাল মোড়ল মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ছোট দুধখালী গ্রামের আব্দুল আউয়াল মোড়লের ছেলে। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা ভিড় করছেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে থাকার সময় ফয়সাল মোড়ল ঢাকার জগন্নাথপুরের বিভিন্ন মসজিদের সামনে আতর বিক্রি করতেন। হঠাৎ একদিন তার পরিবারকে জানান, হিজামা সেন্টারে চাকরি করার জন্য দুবাই যাচ্ছেন। এরপর ২০২৪ সালের মার্চ মাসে দুবাই যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। গত কোরবানির ঈদের আগে তার সঙ্গে পরিবারের সবশেষ যোগাযোগ হয়। এরপর ফয়সালের আর কোনো খোঁজ পাননি পরিবার।
আরও পড়ুন:
আফগান সীমান্তের কাছে তুমুল সংঘর্ষে পাকিস্তানের ১৯ সেনা নিহত
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রদেশের কারাক জেলায় পাকিস্তানী নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে ১৭ টিটিপি সদস্য নিহত হন। এরমধ্যে মারা যান বাংলাদেশি যুবক ফয়সাল। তার পরনের পোশাক থেকে আইডি কার্ড, টাকা এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট উদ্ধার করেন সেখানকার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে পাকিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় নিহতদের ছবি। সেই ছবি দেখে ফয়সালের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয় তার পরিবার।

নিহত ফয়সাল মোড়লের বাবা আব্দুল আউয়াল মোড়ল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করেন। তার বড় ভাই আরমান হোসেন দারাজের ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করেন।
নিহত ফয়সালের মা চায়না বেগম বলেন, ‘ফয়সাল দুবাই যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু সে পাকিস্তানে গেছে তা আমরা জানতাম না। ও কারও খপ্পরে পড়ে পাকিস্তানে গেছে।’
এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান চায়না বেগম। পাশাপাশি সন্তানের মরদেহ দেশে ফিরে আনার দাবি জানান তিনি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিবার চাইলে মরদেহ দেশে ফেরত আনতে সহযোগিতা করা হবে। আর কেউ যাতে এমন সংগঠনে যুক্ত হতে না পারে, সেজন্য পরিবারকে সতর্ক থাকতে হবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/এএসএম