জামায়াতপন্থিদের তোপে শামীম ওসমানের ‘ঘনিষ্ঠ’ সাবেক ওসি
নারায়ণগঞ্জে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা ও জামায়াতে ইসলাম সমর্থিত আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েছেন জেলা পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।
তোপের মুখে পড়া সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা ও সোনারগাঁ থানায় বিভিন্ন মেয়াদে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নারায়ণগঞ্জে দায়িত্ব পালনকালীন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠতা অর্জন করেন তিনি। শামীম ওসমানের মালিকানাধীন শীতল ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের তিনিও একজন অংশীদার বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় একাধিক সূত্র।
তবে এ বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী বলেন, এমন কোনো ঘটনার খবর আমরা পাইনি। এমনকি আইনজীবী কিংবা সাবেক ওই পুলিশ কর্মকর্তাও আমাদের কোনো অভিযোগ জানাননি।
এদিকে জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ লʼইয়ার্স কাউন্সিলের জেলার সহকারী সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমি ও আমার মামাতো ভাই গ্রেফতার হই। তখন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুর কাদেরের নেতৃত্বে আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে ও আমার মামাতো ভাইকে ওসি মঞ্জুর কাদের তার রুমে নিয়ে এক ঘণ্টা পিটিয়েছে। তারপর তিন দিন গুম রেখেছে। আমার পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকাও নিয়েছিল। সেই মঞ্জুর কাদেরকে ডিসি অফিসের নিচে দেখতে পাই। তখন তাকে আটকানোর চেষ্টা করি পুলিশে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি দৌড়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জেএম শাখায় চলে লুকান। সেখানে গিয়ে তাকে পেলেও বিএনপিপন্থি কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় এবং পরে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে।’
জামায়াতপন্থি আরেক আইনজীবী ও সাবেক শিবির নেতা অ্যাডভোকেট তাওফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আমৃত্যু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এই মঞ্জুর কাদের ছিলেন একজন ঠান্ডা মাথার খুনি। তাকে আমরা পুলিশে দিতে চেয়েছিলাম, বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের কারণে পারিনি।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, সাবেক ওসি মঞ্জুর কাদের বর্তমানে অবসরে আছেন। তিনি কোনো কাজে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এসেছিলেন। এর মধ্যে কিছু লোকজন তাকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পেয়ে মব করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে আমরা আইনজীবীরা সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করি এবং মঞ্জুর কাদেরকে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে ছেড়ে দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় মব করা যাবে না। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে মামলা করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এফএ/জেআইএম