কুমারখালীতে দেড়লাখ ঘনমিটার বালু লুট, থানায় অভিযোগ

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০৮:৩১ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ইজারা নেওয়া বালু মহাল থেকে তোলা প্রায় দেড় লাখ ঘনমিটার বালু লুটের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গায় এ ঘটনা ঘটছে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ইজারা নেওয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক রাকিবুল ইসলাম থানায় এক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

থানায় করা জিডি, স্থানীয় ও একাধিক সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ২৩ জুন গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নদী ড্রেজিং করে ৬ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার বালু বিক্রয় করে অপসারণের দরপত্র আহবান করে পাউবো। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে পাঁচ কোটি ১৭ লাখ টাকায় ইজারা পাই কয়ার মেসার্স প্রিয়াংকা ব্রিকস। প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা জমা প্রদান শর্তে ইজারাদার বালু বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হলে ১২ সেপ্টেম্বরর বালু বিক্রি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করে এবং বালু অপসারণ কাজ বন্ধ করে দেয়।

১২ সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ ঘনমিটার বালু লুট করে কয়া ইউনিয়নের রায়াডাঙ্গা ইদগাহ, রায়ভাগা গোরস্থানে এবং বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করেছে প্রভাবশালীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়ার রায়ডাঙ্গা গোরস্তানের পিছন দিকে অবস্থিত গড়াই নদী। সেখানে নদীতে বসানো রয়েছে দুটি অবৈধ ড্রেজার। পাইপের সাহায্যে বালু ফেলা হচ্ছে গোরস্তান সংলগ্ন সৌদি প্রবাসী সাইদুল ইসলামের আমবাগানে। ভরাট করা হয়েছে রায়ডাঙ্গা ঈদগাহ মাঠ।

কুমারখালীতে দেড়লাখ ঘনমিটার বালু লুট, থানায় অভিযোগ

এ সময় ড্রেজার পরিচালনাকারী স্থানীয় হাসেম আলী বলেন, মাসখানেক হল নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছি। এতোদিন ঈদগাহ ও গোরস্তানে দিছিলাম। প্রতি ফিট ৪টাকা দরে দুদিন ধরে সাইদুলের আমবাগানে দেওয়া হচ্ছে। তার ভাষ্য, গেল একমাসে তিনি প্রায় ২৫ হাজার ঘনফুট বালু বিক্রি করেছেন।

কয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, এতোদিন আমরায় বালু তোলার বিরোধিতা করেছি। কিন্তু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বালু তোলা হচ্ছে।

প্রিয়াংকা ব্রিকসের ব্যবস্থাপক রাকিবুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীরা ব্যক্তিগত সুবিধা না পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন করে বালু বিক্রি বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু তারা এখন ইজারা করা বালু লুট করে বিক্রি করছে। এতোদিনে প্রায় দেড় লাখ ঘনমিটার বালু লুট করেছে প্রভাবশালীরা।

বালুর ঘটনায় লিখিত জিডির কথা স্বীকার করেছেন কুমারখালী থানার ওসি খন্দকর জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, বালুর ইজারা দিয়েছে পাউবো। বালু লুটের ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আল-মামুন সাগর/আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।