রাজশাহীতে বেড়েছে শীতকালীন সবজির দাম, কমেছে পেঁয়াজের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ০২:৫৪ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

রাজশাহীতে বেড়েছে শীতকালীন সবজির দাম। তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম কমেছে। অন্য পণ্যের দাম আগের মতই রয়েছে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজশাহীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে অপ্রত্যাশিত অতিবৃষ্টিতে বিপুল ফসল ক্ষতির কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম লাফিয়ে বেড়েছে। এদিকে দাম বাড়ার কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ওপর চাপ ব্যাপকভাবে বাড়ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীত মৌসুমের সব ধরণের সবজির দাম বেড়েছে। কোনো কোনো সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বাজারে গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া গোল আলু কেজি ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা, হল্যান্ড আলু ১৫-১৮ টাকা থেকে ২৮ টাকা, বেগুন ও শিম ৯০-১০০ টাকা থেকে ১২০-১৩০ টাকা, টমেটো ১২০-১৩০ থেকে ১৬০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৩৫-৪০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ৪০, কচু ৪০ থেকে ৬০ এবং মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় পৌঁছেছে। পালংশাক, লালশাক, ধনেপাতাসহ অন্যান্য পাতাও ১০-২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে লাউয়ের দাম আপাতত স্থিতিশীল রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানায়, টানা বৃষ্টিতে অনেক জমি পানির নিচে থাকায় আগাম সবজির উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে আড়তগুলোতেও সরবরাহ কমে গেছে।

সাহেব বাজরে সবজি বিক্রেতা নাসির উদ্দিন বলেন, আমরাও আগের মতো পণ্য তুলতে পারছি না। বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরবরহ নেই বলেই চলে।

এদিকে সবজির দাম বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার।

শালবাগানের গৃহিণী শরিফা খাতুন বলেন, আগে ২০০-২৫০ টাকায় কয়েক রকম সবজি কেনা যেত। এখন ৪০০ টাকায়ও ঠিকমতো বাজার হয় না। সংসারে যে আয় তা বাড়েনি। ফলে এখন সংসার চালানোর কঠিন হয়ে পড়েছে।

সবজির দাম বাড়লেও গত কয়েকদিনে বাড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। এই সপ্তাহে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা দরে। আদা ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি, রসুন প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা ও কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে রাজশাহীর বাজারে মাছে দাম আগের মতই আছে। চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকায়, পাঙাশ ২৫০ টাকায়, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় এবং তেলাপিয়া ৩০০ টাকায়। দেশি পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।

চালের বাজারেও স্থিতিশীলতা নেই। সরু নাজিরশাইল বা সিলেক্ট চালের দাম কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, মাঝারি মানের চাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং মোটা চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, আর প্যাকেটজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায়। সরিষার তেল লিটারে ২০০ টাকায় পৌঁছেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়, আর প্যাকেটজাত চিনি ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। খেসারি ডাল ১৫০ টাকা, মসুর ডাল ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম এখন কেজিপ্রতি ২০০ টাকা, সোনালি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়।

সাখাওয়াত হোসেন/এনএইচআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।