জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা হলেন জেলা এনসিপির আহ্বায়ক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৯:৫৩ এএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

 

গাইবান্ধায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা খাদেমুল ইসলাম খুদিকে আহ্বায়ক করে ৫২ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে কমিটি ঘোষণার পর থেকে জেলাজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এই কমিটির অনুমোদন দেন।

এদিকে জাসদের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খুদিকে জেলা কমিটির আহ্বায়ক করায় জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই কমিটি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন অনেকেই। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু কর্তৃক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ‘অগ্নি সন্ত্রাস ও জঙ্গির মা’ আখ্যায়িত করে দেওয়া পুরোনো ভিডিও ও বক্তব্য প্রচার করে খাদেমুল ইসলাম খুদিকে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে খাদেমুল ইসলাম খুদি জেলার সাদুল্ল্যাপুর উপজেলায় সুধী সমাবেশের নামে গোপনে সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য একটি মিটিয়ের আয়োজন করেছিলেন। প্রশাসন বিষয়টি জানার পর, সেই গোপন সুধী সমাবেশে যাওয়ার আগে খাদেমুল ইসলাম খুদি ব্যানার নিয়ে তিনি পালিয়ে যায়। রোষানলে সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তিনি নানান কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।

এসএম এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি কমিটির প্রতিবাদ করে ফেসবুকে লেখছেন, যারা সারাটা জীবন আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করলো, তারা কীভাবে আহ্বায়ক কমিটিতে আসে? এনসিপির একটা নতুন বিপ্লবী দল। তাদের বলতে চাই, টাকার বিনিময়ে শহীদদের রক্ত বিক্রি করতে একটু লজ্জা লাগে না আপনাদের?

মামুন সরকার নামের একজন লেখেন, আওয়ামী লীগের অপর নাম এনসিপি। আওয়ালীগকে পুনর্বাসন করার জন্যই তাদের দোসরদের কমিটি দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুদির এক বন্ধু বলেন, খুদি ছোট বেলা থেকেই ক্ষমতার লোভী ছিলেন। ছাত্রজীবনে ক্ষমতা আর পদের লোভ ছিল অন্য রকম। যদিও খুদি জাসদের রাজনীতির সঙ্গে ছাত্রজীবন থেকেই জড়িত। তারপর তিনি আ’লীগের বাহিরে কোনো কাজ করেন নাই।

খাদেমুল ইসলাম খুদিকে এনসিপির জেলা আহ্বায়ক করার প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতারা এনসিপি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তালাবন্ধ এনসিপি অফিসে সামনে কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।

অন্যদিকে জেলা এনসিপির ঘোষিত কমিটি যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম মনিরুজ্জামান সবুজ এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন পদত্যাগ করছেন। সবুজ তার পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, নীতি আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে স্বৈরাচারের দোসরকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে শহীদদের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে। তাই আমি ওই কমিটি থেকে পদত্যাগ করলাম।

গাইবান্ধা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব বায়োজিদ বোস্তামী জীম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগপন্থি প্রভাবশালী মহলের দোসর, সুবিধাবাদী চরিত্র, সয়াবিন রাজনীতির প্রতিনিধিসহ একাধিক বিতর্কিত ব্যক্তিকে অযৌক্তিকভাবে পদ-পদবি দেওয়া হয়েছে, যা এনসিপির ত্যাগী ও প্রকৃত কর্মীদের সরাসরি অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। জেলার আহ্বায়ক কমিটি দ্রুত বিলুপ্তির দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের মুঠো ফোনে একাধিকবার ফোন ও খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।


আনোয়ার আল শামীম/কেএইচকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।