সারাদেশের চাহিদা মেটাচ্ছে ঝালকাঠির বিলাতি গাব


প্রকাশিত: ০৫:১৫ এএম, ২৭ জুন ২০১৬

ঝালকাঠিসহ বরিশালের বিভিন্ন স্থানে বিলাতি গাবের বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ গাব এখন সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

এলাকাবাসী জানায়, পাকা গাবের মৌসুম আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস। এ সময় জেলার বিভিন্ন বাজারে পাকা গাবের মৌ মৌ গন্ধে মন মাতোয়ারা হয়ে যায়।

ঝালকাঠি শহরের বড় বাজার, চাঁদকাঠি বাজার, কলেজ মোড়, কাঠপট্টি, রাজাপুরের বাগড়ি বাজার, সদরের বাজার, পুটিয়াখালী,  লেবুবুনিয়া বাজার, পাকাপুল বাজার, গালুয়া বাজার, নলবুনিয়া বাজার, ফকিরের হাট, চারাখালির হাট, বাদুরতলা হাট, কাচারী বাড়ির হাট, বলারজোর হাট, গাজির হাট, পাড়ের হাট, বাইপাস মোড় বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে এবং বাড়ি বাড়ি থেকে ব্যবসায়ীরা গাব পাইকারি হিসেবে কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মংলা, খুলনা ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহর-বন্দরে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করছে।

জীবনদাশকাঠি গ্রামের মজিদ, আলতাফ ও সুলতান জানান, গাবগাছের কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। এছাড়া বিলাতি গাব সুস্বাদু এবং কেমিক্যাল মুক্ত হওয়ায় এর চাহিদাও অনেক। বর্তমানে অতিথি আপ্যায়নেও শোভা পাচ্ছে এ লোভনীয় ফল। পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং  ভেজাল ও ফরমালিন মুক্ত এ গাব সবাই পছন্দ করে।

গ্রামবাসীরা জানান, গাব চারা ইচ্ছা করে রোপণ না করলেও পাখি বিভিন্ন স্থান থেকে গাব ফল এনে বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে যায়। পরে তা থেকে চারার মাধ্যমে গাছের জন্ম হয়।

দেখা গেছে, ঝালকাঠির প্রায় সব বাড়িতেই কমবেশি গাব গাছ আছে। এ গাছের গোড়ায় কোনো সার ওষুধের প্রয়োজন না হলেও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। তবে পরিচর্যা না থাকায় গাবগাছের আধিক্য দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। বেশি গাব গাছ রোপণ ও পরিচর্যা করলে প্রতি বছর গাব ফল থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

গালুয়া বাজারের পাইকারি গাব ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, পাকাপুল বাজারের হারুন সরদার জানান, জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে ১ কুড়ি (২০টি) পাকা গাব ফল ২০ টাকায় কেনা যায়।

পরে সেই ফল বাছাই করে ঝুড়িতে প্যাকিং করে বিভিন্ন পরিবহনের ছাদে ও লঞ্চে করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মংলা, খুলনা, যশোর ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহর-বন্দরে ১০০ টি গাব পাইকারি বিক্রি হয় ১২০-১৬০ টাকায়। শহরের পাইকাররা প্রতিটি গাব ফল ভোক্তাদের কাছে ৫-১০ টাকা হারে বিক্রি করে।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের মাটি বেশ উর্বর। তাই সকল ফলের পাশাপাশি গাব ফলেরও ফলন  বেশি। তাছাড়া প্রতি বছরই আমাদের এ অঞ্চলে গাবের বাম্পার ফলন হচ্ছে। এ গাব স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ হচ্ছে।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মানস কৃষ্ণ কুন্ডু জানান, গাব ফরমালিন ও ভেজালমুক্ত একটি দেশীয় ফল। এটি যেমন মজাদার ঠিক তেমনি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।   
           
আতিকুর রহমান/এসএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।