কুমিল্লায় পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় কাজের মেয়ে খুন : গৃহকত্রী আটক
কুমিল্লা মহানগরীতে পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় নির্মম নির্যাতনে রিনা আক্তার নামের এক কাজের মেয়ে খুন হয়েছে। এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী নাজনীন আক্তার লিপিকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টায় কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) শামসুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা এখনো থানায় আসেনি, তাই লাশ হস্তান্তর এবং মামলা দায়ের নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানে নিহতের লাশ পড়ে রয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। ময়নাতদন্তকারী ডাক্তারদের অভিমত শারীরিক নির্যাতনের পর হয়তো শ্বাসরুদ্ধ করে ওই কাজের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কাজের মেয়ে রিনা আক্তারের লাশ রেখে পালিয়ে যায় ফেনী জেলার ফুলগাজী থানা পুলিশের এএসআই আবু জাহের মোল্লার স্ত্রী নাজনীন আক্তার (লিপি)। কিন্তু, দিনভর লাশের পরিচয় পাওয়া না গেলেও রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ নগরীর জিলা স্কুল রোডস্থ সমতট ল্যাগাসী নামে ১২ তলা ভবনের তিন তলার বাসা থেকে তাকে আটক করে।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সালাউদ্দিন মাহমুদ জানান, নিহতের শরীরে নির্যাতনের একাধিক চিহৃ ছিল।
আটক হওয়া গৃহকর্তী নাজনীন আক্তার জানান, রিনা আক্তারকে জ্বীনে মেরেছে, তাকে তাবিজও দেয়া হয়েছে। তবে গৃহকর্তীর স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা জাহের মোল্লা জানান, গত মঙ্গলবার রিনা আক্তার বাসায় ভাত রান্না করার সময় গরম পানিতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। গত বুধবার রান্না ঘরে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয় বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভবনের অন্য বাসিন্দারা জানান, প্রায়ই ওই কাজের উপর নির্যাতন চালানো হতো, কয়েক মাস পূর্বে তাকে মেরে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়েছিল।
কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) শামসুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় আসেনি। তাই লাশ হস্তান্তর এবং মামলা দায়ের নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আটক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছ।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় এবং গৃহকর্মীর বাড়ি একই জেলার নাসিরনগরে।
কামাল উদ্দিন/এমএএস/আরআইপি