ফরিদপুরে জিংক ধানে কৃষকের মুখে হাসি


প্রকাশিত: ০৯:৫৫ এএম, ১৭ মে ২০১৫

জিংকসমৃদ্ধ ধান আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন ফরিদপুরের চাষিরা। প্রথমবারের মতো নতুন এ জাতের ধান আবাদে কৃষকেরা ফলন নিয়ে শঙ্কিত থাকলেও এখন তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। জিংক ধানেরর বাম্পার ফলনে এ অঞ্চলের কৃষকেরা বেজায় খুশি।

২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো আবিস্কার করা হয় জিংকসমৃদ্ধ ধান ব্রি-৬৪। বাংলাদেশ ধান গবেষণঅ ইন্সটিটিউটের একদল গবেষক এ ধানের জাতটি আবিস্কার করেন। এ ধানটিতে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তাসহ নানাবিধ শরীর বৃত্তীয় প্রক্রিয়ার জন্য বেশ কার্যকর। যেসব শিশুর জিংকের অভাবে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ব্যহত হয় তাদের জন্য এ ধানের চাল বেশ কার্যকর। এছাড়া মহিলাদের নানা রোগ প্রতিরোধে জিংকসমৃদ্ধ ধানের চাল কার্যকর ভূমিকা পালন করবে এমনটিই বলছেন গবেষকেরা।

এ ধানের চালের ভাত খেলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জিংকের অভাবজনিত অপুষ্টি লাঘব হবে। বিশ্বে এই প্রথম জিংকসমৃদ্ধ ব্রি-৬৪ ধানের আবাদ হয়েছে ফরিদপুরে। ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে স্থানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠান `আমরা কাজ করি` (একেকে) এ ধানের বীজ কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহ করে। নতুন জাত হওয়ায় জেলার অনেক কৃষকই এ ধান চাষে অনাগ্রহ দেখায়। কিন্তু এ ধানের গুণাগুণ সর্ম্পকে চাষীদের বিস্তারিত বলার পর মোট ১৫০জন কৃষক তাদের জমিতে এ ধানটি রোপণ করে। অন্যান্য ধানের চেয়ে কম সময়ে ফলন হওয়া, অধিক পরিমাণ ফলন পাওয়া ও খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা এখন বেজায় খুশি।

জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার কৃষক আবুল মাতুব্বর, হাসেম খান, সোহরাব বেপারী জানান, যখন তাদের নতুন জাতের এ ধান আবাদের কথা বলা হয় তখন তারা তেমন একটা রাজি ছিলেন না। ঝুঁকি নিয়ে তারা কয়েক বিঘা জমিতে এ ধানের আবাদ করেন। আশাতীত ফলন পাওয়ায় তারা এখন বেশ খুশি। ফলন দেখে অন্য চাষীরাও তাদের কাছ থেকে আগাম ধানের বীজ চেয়েছেন। পরীক্ষামূলকভাবে যেসব কৃষক তাদের জমিতে এ ধানের আবাদ করেছেন তারা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেছেন অধিক ফলন পাবার কথা। অন্য ধানের চেয়ে এ ধানের ফলন দু থেকে তিনগুণ বেশি বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা `আমরা কাজ করি` (একেকে)’র প্রতিনিধি কুদ্দুস মোল্যা জানান, ১৫০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে এ ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষকদের আগাম ধারণা দেয়া হয়েছে এ ধান সর্ম্পকে। জিংকের বিষয়টি কৃষকদের মাঝে বেশ আলোড়ন তুলেছে। আগামীতে অধিক সংখ্যক কৃষকের মাঝে এ ধানের বীজ সরবরাহ করা হবে।

একেকে’র নির্বাহী পরিচালক এম এ জলিল জানান, জিংকের ঘাটতি পূরণে নতুন জাতের এ ধান আবাদে আমরা এগিয়ে এসেছি। এ বছর অল্প সংখ্যক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ সরবরাহ করা হলেও এখন চাহিদা বেড়েছে। কৃষকেরা এবার এ ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পাওয়ায় বেশ খুশি।

এসএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।