আমাদের হুমকি দিচ্ছে আসামিরা : নজরুলের স্ত্রী


প্রকাশিত: ০১:৫৮ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০১৫

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) থেকে অব্যাহতি পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিন মিয়াসহ অন্যান্য আসামি ও তাদের লোকজন মামলার বাদীকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।

সেলিনা ইসলাম বিউটি সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার একটির বাদী ও নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

মামলার আসামি ইয়াছিন মিয়াকে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করে নজরুলের স্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার লোকজন আমাদের কাছে ১২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছে। এ সময় অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ইয়াছিন মিয়া ও আমিনুল রাজু ১৫ মাস পরে এলাকায় ফিরে এসে আমার বাবা (নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম), ভাই, দেবর (নজরুলর ছোট ভাই), ভাগিনা, মামা শ্বশুর ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের নামে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।

যাদের নামে এই তিনটি মামলা দেয়া হয়, তারা সাত খুন মামলার সাক্ষী। যাতে তারা সাত খুন মামলায় সাক্ষী দিতে না পারে সেজন্য এই মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ থেকে বোঝা যায় আমার স্বামীসহ সাতজনকে হত্যা করে আমাদের উপর ক্ষোভ কমেনি তাদের। এখন আবার আমাদের বিরুদ্ধে লেগেছে।

শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়াস্থ বুকস গার্ডেনে নিহত নজরুল ইসলামের বাসায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও নাসিকের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেলিনা ইসলাম বিউটি এসব অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নিহত নজরুল ইসলামের ছোট ভাই আব্দুস সালাম।

সেলিনা ইসলাম বিউটি সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, সাত খুন মামলা থেকে রেহাই পেতে ইয়াছিন মিয়ার ১২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই ১২ কোটি টাকা আমাদের দিতে হবে। ইয়াছিন মিয়ার ৪/৫ জন লোক আমাদের কাছে এসে ১২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছে।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল আমার স্বামী নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম তাদের জীবিত পাওয়া যাবে। তাই আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিলাম।

৩০ মে আমার স্বামীসহ সাতজনের মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে উঠে। তখন আমার ভাই, বোন, বাবা, দেবর ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন সবাই নদীর পাড়ে ছিলাম। আপনজন হারিয়ে আমরা শোকে কাতর ছিলাম। তখন আমরা মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্ত ও দাফনের কাজে নিয়োজিত ছিলাম।

তিনি আরো বলেন, নূর হোসেন, ইয়াছিন, হাসু, রাজু ইকবালের অত্যাচারে সারা সিদ্ধিরগঞ্জের বিক্ষিপ্ত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে হয়তোবা খুনীদের পাম্পে আগুন দেয়। পরদিন আমার স্বামীর জানাজায় লক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। এই জানায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগমেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ প্রমাণিত হয়।

সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, গত বছর মে মাসে থানা আওয়ামী লীগের সভা ডেকে ইয়াছিন মিয়াকে বহিষ্কার করে। ১৫ মাস পলাতক থেকে এখন প্রকাশ্যে এসে থানা আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে আমাদের বাবা, ভাই, দেবর, মামা শ্বশুর, ভাগিনা ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে নানা রকম হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। আমার নিহত স্বামী নজরুলের কর্মী অন্তর, ফাহিম, রাব্বি, জিদান ও শফিসহ সাতজনকে তারা মারধর করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

তিনি বলেন, আমার স্বামী নজরুল ইসলাম শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে জীবনে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আওয়ামী লীগ করে গেছে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

হোসেন চিশতী সিপলু/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।