শীতার্তদের মুখে হাসি ফোটাল ‘পাউবো’
উত্তরের হিমেল হাওয়া গেড়ে বসেছে তিস্তা পারে। ক’দিন আগেই বরফের চাদরে ঢাকা পড়েছিল ওপারে সিকিম-গ্যাংটক। দশ বছরের মধ্যে এবারই বরফের দেখা মিলেছে তিস্তার উৎপত্তিস্থল সিকিমে। তার রেশ এখন উত্তরের জেলাগুলোতেও। সবে শৈত্যপ্রবাহ শেষ হয়েছে, কিন্তু হাড় কাঁপানো শীত এখনও রয়ে গেছে। পৌষের শেষ বেলায় ফের শৈত্যপ্রবাহের আভাস মিলছে।
শীতে কাঁপছে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধার তিস্তা পাড়ের মানুষেরাও। নানা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাই এ পাড়ার মানুষদের নিয়তি। গ্রীষ্মে পিঠফাঁটা গরম। বর্ষায় নদী ভাঙন। আর শীত বেলায় তো চরম অসহায়ত্ব। অন্য মৌসুমে মানিয়ে নিতে পারলেও শীতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগই জানে তিস্তা এলাকার মানুষেরা।

বছর ঘুরলেই তীব্র শীত, অথচ তা নিভারণের পর্যাপ্ত বস্ত্র থাকে না। বিশেষ করে শীত এলেই গরিবের কপালে ভাজ পড়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে রাজনীতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সংগঠন। মানব সেবাকে ব্রত জেনে সহযোগিতা করছেন সরকারি-বেসরকারি সংগঠনও।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার তিস্তা ব্যারেজ এবং ডালিয়া সংলগ্ন এলাকায় অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের সহায়তায় দু’শ শীতার্ত মানুষকে কম্বল দেয়া হয়।
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ। এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য। মানবিক এবং সামাজিক দায় থেকেই আজকের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। নদীর অববাহিকা এ অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষের শীত নিভারণে সামান্য ভূমিকা রাখতে পেরে নিজেরাই ধন্য মনে করি। আমি মনে করি, মানব কল্যাণে সমাজের প্রতিজন মানুষকে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো সময়ের দাবি।’
কম্বল বিতরণে অংশ নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান বলেন, ‘সকলের অংশগ্রহণেই একটি সমাজের পরিবর্তন আসে। গরিব জনগোষ্ঠীকে পেছনে সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠা দেয়া যায় না। আজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় শীতবস্ত্র বিতরণে অন্যদেরকে অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে করি।’
শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘তিস্তা পারের মানুষেরা অধিকাংশই নদী ভাঙনের শিকার। শৈত্যপ্রবাহ এলে গরিব মানুষের আর উপায় থাকে না। অসহায়দের বাঁচাতে রাষ্ট্র, সমাজকে এখনই এসব অঞ্চলে নজর দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এএসএস/এমআরএম/জেআইএম