পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর দুই মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৮:৩৬ পিএম, ১৮ জুন ২০১৯

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এবং অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেছেন তার স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন (৪০)।

মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের আমলি আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুন্যাল-২ এ মামলা দুটি করেন তিনি।

মামলার আসামি পুলিশ ইন্সপেক্টর সাইদুর রহমান বর্তমানে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ অফিসে আরওআই পদে কর্মরত।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ৩০ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ পৌর সদরের আবুল হোসেনের মেয়ে আম্বিয়া খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার দিঘী সগুনা গ্রামের মৃত কোরবান মোল্লার ছেলে তৎকালীন পুলিশ কনস্টেবল সাইদুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সাইদুর রহমানের পরিবারের দাবি অনুযায়ী ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি মোটরসাইকেল ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার উপহারসামগ্রী প্রদান করা হয়।

বিয়ের কিছুদিন পর থেকে সাইদুর রহমান ও তার দুই ভাই আম্বিয়ার পরিবারকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন। আম্বিয়ার সুখের কথা ভেবে আবারও ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দেন তার বাবা আবুল হোসেন। ২০১৬ সালে পুলিশ ইন্সপেক্টর হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে সাইদুর রহমান আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য আম্বিয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।

এর আগে ২০১৩ সালে গোপনে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামে ফারহানা খাতুন ইতি নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই নানা অজুহাতে প্রথম স্ত্রী আম্বিয়া ও তার একমাত্র মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী উম্মে সাদিয়া সিমিকে (১৪) শারীরিক নির্যাতন করত সাইদুর।

এক পর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আম্বিয়া মেয়েসহ তার বাবার বাড়ি তাড়াশে গিয়ে ওঠেন। বর্তমানে তারা সেখানেই বসবাস করছেন। বিষয়টি পারিবারিকভাবে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টার পরও কোনো সমাধান না হওয়ায় মঙ্গলবার আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে আদালতে পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুর, তার দুই ভাইসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি এবং সাইদুর রহমানকে আসামি করে অপর একটি মামলা করেন।

আম্বিয়া খাতুন বলেন, একুশ বছরের সংসার জীবনে স্বামী সাইদুরের কাছ থেকে আমি এতটাই নির্যাতনের শিকার হয়েছি, যা বলে বোঝানো যাবে না।

এ প্রসঙ্গে জয়পুরহাট পুলিশ লাইন্সে রিজার্ভ অফিসে কর্মরত আরওআই পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, আমার কোনো ছেলেসন্তান না থাকায় আমি দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। আমি এখনও স্ত্রী আম্বিয়া ও মেয়ে সিমিকে ভরণ-পোষণ দিচ্ছি। এটা আমার পারিবারিক সমস্যা। দ্রুত ফয়সালা হয়ে যাবে।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।