‘এই বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে বিদেশফেরত ব্যক্তি আছে’
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের বাড়ি চিহ্নিত করা শুরু করেছে পালং মডেল থানা পুলিশ। শনিবার রাতে জেলা পুলিশের ওয়েবসাইটে ও পালং মডেল থানা পেজে এ তথ্য দেয়া হয়।
পালং মডেল থানা পুলিশের এসআই মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান জানান, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের বাড়ির বাইরে সাদা কাগজে কালো অক্ষরে লেখা লিফলেট লাগানো হচ্ছে। এতে লিখা হয়েছে ‘এই বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে বিদেশফেরত ব্যক্তি আছে’। যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই বুঝতে পারে এবং ওই ব্যক্তি থেকে দূরত্ব বজায় রাখে। তাছাড়া বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনের সব নিয়ম মেনে পরিবারের সদস্যদের থেকেও আলাদা থাকতে বলা হচ্ছে।
ইমিগ্রেশন থেকে বিদেশফেরতদের তথ্য সংগ্রহ করে শনিবার থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে শরীয়তপুর সিভিল সার্জন ডা. এস এম আব্দুল্লাহ্ আল মুরাদ জাগো নিউজকে জানান, করোনাভাইরাস রোধে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নিরাপদ উপকরণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে। জরুরি ভিত্তিতে আসা ২০০ প্রটেক্টিভ কাভারেল, ৩০০ হ্যান্ডগ্লাবস, ১০০ জীবাণুমুক্ত হেক্সাসল ও ৩০০ মাস্ক পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, বিদেশফেরত ৩৩৫ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। আজ সকাল পর্যন্ত সদর উপজেলায় ৭১, নড়িয়ায় ১২৬, জাজিরায় ৩২, ভেদরগঞ্জে ৪৫, ডামুড্যায় ৪০ ও গোসাইরহাটে ২১ জনসহ ৩৩৫ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এদের প্রত্যেককেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৩ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। নতুন করে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় এসেছেন ৬১ জন। জেলায় ৩০টি আইসোলেশন শয্যা ও ১০০টি কোয়ারেন্টাইন শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত কোনো করোনাভাইরাস আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন কেউ শনাক্ত হয়নি।
তিনি আরও জানান, মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন প্রবাসীদের পর্যবেক্ষণ করছেন, দিচ্ছেন পরামর্শ। অনেক ক্ষেত্রে এসব স্বাস্থ্যকর্মীরা মুখোমুখি হচ্ছেন নানা বিড়ম্বনার। তবে সব ধরনের বাধা অতিক্রম করে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা মাঠে থাকবেন। যারা বিদেশ থেকে ফিরেছেন তাদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য বলা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, হোম কোয়ারেন্টাইনের আদেশ না মানায় জেলায় এই পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ জন প্রবাসীকে ১ লাখ ৬২ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জেলার বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির কারণে ১৯ জনকে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির কারণে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ১০ জন ব্যবসায়ীকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
মো. ছগির হোসেন/জেএইচ/পিআর