‘এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে’ গুজবে শরীয়তপুরে মসজিদে মসজিদে মাইকিং

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০৪:৩৫ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০২০

শরীয়তপুরে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করে ডাকাতের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাই‌কিং করে বলা হচ্ছে ‘এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে, সবাই হুঁ‌শিয়ার সাবধান’। এতে জেলার বি‌ভিন্ন উপজেলার দেড় শতাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ শোরগোল ও চিৎকার করে হাতে লা‌ঠি, টর্চলাইট নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। বুধবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থে‌কে দেড়টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে চলে এ মাই‌কিং।

এলাকাবাসী জানায়, বুধবার দিবাগত গ‌ভীর রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার কাশিপুর, দাতপুর, আংগা‌রিয়া, স্বর্ণঘোষ, চর স্বর্ণঘোষ, ধানুকা, রাজগঞ্জ, আড়িগাঁও, মনোহর বাজার, চিক‌ন্দি, শৌলপাড়া ও ন‌ড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামা‌নিক, রাজনগর, মোক্তারের চরসহ জা‌জিরা, ভেদরগঞ্জ, গোসাইরহাট ও ডামুড্যা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মসজিদে ‘এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে সবাই হুঁ‌শিয়ার, সাবধান’ বলে মাই‌কিং ক‌রা হয়। এতে গ্রামের হাজার হাজার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে লা‌ঠি, টর্চলাইট নিয়ে শোরগোল ও চিৎকার করতে করতে ঘরের বাইরে বের হয়ে আসে।

অন্য‌দিকে সামাজিক ‌যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এ ‌নিয়ে বি‌ভিন্ন ধরনের লেখালে‌খি হচ্ছে। বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী। কেউ কেউ বলছেন জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হতে পারে। কিন্তু হঠাৎ করে রাতে মসজিদ থেকে মাইকিং করে ডাকাতের আতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনার কারণ জানা যায়নি।

‘করোনা সচেতনতা শরীয়তপুর’ নামে এক‌টি ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ‘ডাকাত ব্যাপারটাকে গুজব হিসেবে নিলেও বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ কবে যেন রাখাল বালকের গল্পের মতো হয়ে যায়। তিন-চার রাত টানা ডাকাত আসছে ডাকাত আসছে বলে রাত জাগবে। পঞ্চম রাতে গুজব ভেবে সবাই গভীরঘুম দেবে। সকালে শোনা যাবে ডাকাতি হয়ে গেছে।’

ফেসবুকে একজন লিখেছেন, এলাকায় ডাকাত পড়ার নামে মসজিদে মসজিদে মাইকিং। আমার বিশ্বাস, প্রশাসনকে বিব্রত করতে এবং সরকারকে বিপাকে ফেলতে এটা কোনো বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ। ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু সবসময় পানি ঘোলা করতে সচেষ্ট থাকে। তারা গুজব রটিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে সমাজকে অস্থিতিশীল করে রাখে। সকল অপপ্রচার, গুজব, অস্থিতিশীলতা ও উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ করছি।

এ বিষয়ে ন‌ড়িয়া থানা পু‌লিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) মো. হা‌ফিজুর রহমান বলেন, রাতে ডিঙ্গামা‌নিক, রাজনগর, মোক্তারের চরসহ বি‌ভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ফোন আসে। তাৎক্ষ‌ণিক গা‌ড়ি নিয়ে বের হই। খোঁজ নিয়ে দে‌খি কোথাও ডাকাত আসেনি। এটা গুজব ছাড়া কিছু নয়।

এ ব্যাপারে পালং মডেল থানা পু‌লিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, আমরা প্রত্যেক এলাকায় খবর নিয়েছি, সদরের প্র‌তি‌টি এলাকা ঘুরে‌ছি। কোথাও ডাকাত আসেনি। এটা নিছক গুজব মাত্র। কেউ গুজবে কান দেবেন না।

মো. ছ‌গির হোসেন/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।