তথ্য গোপন করে সহকর্মীকে দাফন, একসঙ্গে দুই ভাই করোনায় আক্রান্ত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৯:০১ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে চারদিন আগে মারা যাওয়া দোকান কর্মচারীর সংস্পর্শে আসা দুই ভাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় চৌমুহনীতে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুই ভাইয়ের বাড়ি কুমিল্লার দক্ষিণ লাকসামের পৌর শহরে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে তাদের করোনার বিষয়টি নিশ্চিত করে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

আক্রান্ত দুই ভাই চৌমুহনী বাজারের এক দোকানের কর্মচারী। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির সহকর্মী ছিলেন দুই ভাই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অসীম কুমার দাস জাগো নিউজকে বলেন, চৌমুহনী বাজারের কালিতলা রোডের এক দোকানের কর্মচারী করোনার উপসর্গ নিয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ২১ এপ্রিল তাকে (৪৫) ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান। পরে তথ্য গোপন করে তড়িঘড়ি করে তাকে দাফন করেন দোকান মালিক।

অসীম কুমার দাস বলেন, মারা যাওয়া দোকান কর্মচারীর বাড়ি সেনবাগের ছাত্তারপাইয়া এলাকায়। ওই দিন রাতেই স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়। পরদিন ওই দোকানের মালিককে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। একই সঙ্গে তার নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। এখনও তার নমুনার রিপোর্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি।

তিনি আরও বলেন, ওই দোকানের কর্মচারী মারা যাওয়ার আটদিন আগে অসুস্থবোধ করায় প্রথমে এক ভাইকে ছুটি দেন দোকান মালিক। ২২ এপ্রিল আরেক ভাইকে ছুটি দিয়ে লাকসামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া সহকর্মীর সংস্পর্শে থাকায় দুই ভাইয়ের নমুনা সংগ্রহ করে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পরে তাদের করোনা পজিটিভ আসে। বর্তমানে তাদের বাড়ি লকডাউন। তাদের পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

এদিকে, তথ্য গোপন করে দোকান কর্মচারীর দাফনের ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন জেনেও নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে শুধু দোকান মালিককে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার সংক্রমণ এড়াতে নোয়াখালীতে লকডাউন চলছে। এর মধ্যে চৌমুহনী বাজারের কালিতলা রোড ও আশপাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন শত শত পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটছে। পাশাপাশি প্রতিটি দোকানে মালামাল লোড-আনলোড করতে যাওয়া আসা করে অনেক শ্রমিক। এ ঘটনা জানার পর সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মিজানুর রহমান/এএম/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।