সাতক্ষীরায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, যেকোনো মুহূর্তে লকডাউন
ঈদের পর থেকে সাতক্ষীরায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। জেলায় গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ রোগীর গড় হার ৩৯ শতাংশ। রোগীর বাড়তি চাপ ও হাসপাতালে করোনা বেড না থাকায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না জানা গেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জন করানোয় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের করোনা বিষয়ক তথ্য কর্মকর্তা ডা. জয়ন্ত কুমার ঘোষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ভারতফেরত বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রায় ১০০ জনের মতো পাসপোর্টযাত্রীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে করোনার নমুনা সংগ্রহকারীদের মধ্যে মোট ৩০ ভাগ মানুষ করানোয় আক্রান্ত। গত সপ্তাহে এ আক্রান্তের হার ছিল ৪০ ভাগ। আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ভারতীয় ধরন আছে কি-না তা রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।
এ সপ্তাহে আক্রান্তের হার একটু কম হলেও অবস্থা দৃষ্টে আগামীতে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খোদা জাগো নিউজকে জানান, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার রোগীর জন্য ১০০ শয্যা আছে। গত সপ্তাহে ১০০ জনের বেশি রোগী ছিল। বর্তমানে ৪৯ জন রোগী ভর্তি আছে। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আটটি আইসিইউ বেডের মধ্যে চারটিতে করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি আছে।
ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি ব্যবসায়িক সংগঠনের সভাপতি আরাফাত হোসেন জাগো নিউজকে জানান, ভারত থেকে মালামাল নিয়ে কাজে ট্রাক চালক, হেলপার, খালাসি আসছে। তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হচ্ছে। ১৩৮ কিলোমিটার সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন অবৈধ পথে কমবেশি বাংলাদেশে আসা যাওয়া করছে। সাতক্ষীরাকে নিরাপদ রাখতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়েত জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ভারতীয় ধরন পাওয়া যায়নি। ভারতফেরত কয়েকজন পজিটিভ রোগীদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
লকডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোববার (৩০ মে) জেলা করোনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হবে। লকডাউনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক সিদ্ধান্ত জানাবেন।’
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘সংক্রমণের হার উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। গত এক সপ্তাহের গড় হিসেবে জেলায় সংক্রামণের হার ২৯%। রোববার এ সংক্রান্ত বিষয়ে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এখনই লকডাউন ঘোষণার করা কঠিন সঠিক হবে কিনা সে বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে জেলাব্যাপী লকডাউন কার্যকর করা হতে পারে।’
আহসানুর রহমান রাজীব/এসজে/এমকেএইচ