বীর মুক্তিযোদ্ধার বাবা হত্যায় ৫০ বছর পর আদালতে অভিযোগ
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে একাত্তরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাবাকে হত্যার অভিযোগে বরকত উল্লাহ (৮০) নামে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরে অভিযোগটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আমিনুল ইসলামের আদালতে এই অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের ছোট ছেলে মোশারফ হোসেন খোকন। অভিযুক্ত বরকত উল্লাহর বাড়ি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার কাংশা গ্রামে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে নিহতের বড় ছেলে মোস্তাহের বিল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের বাড়িতে ও বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে স্থানীয় রাজাকাররা। কিন্তু কোথাও না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে এবং মোস্তাহের বিল্লাহকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তখনকার এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন স্থানীয় রাজাকার বরকত উল্লাহ, গোলাম গাজম, আব্দুল মান্নান ও বাদশা ফকির।
১৯৭১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মোস্তাহের বিল্লাহকে না পেয়ে তার বাবা আব্দুস ছালাম মুন্সিকে পাকিস্তানি বাহিনীর সহায়তায় ধরে নিয়ে যায়। সাভারের কর্ণপাড়া খালের পাশে বেয়নট দিয়ে খুঁচিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেয় রাজাকার বরকত উল্লাহ ও তার সহযোগীরা। ওই সময় রাজাকাররা পাকবাহিনীর সহায়তায় আব্দুর রাজ্জাক মুন্সি, সিরাজ উদ-দৌলা ও আব্দুল লতিফকে হত্যা করে।
মামলার বাদী মোশারফ হোসেন খোকন বলেন, অভিযুক্ত বরকত উল্লাহর ছেলে মোতালেব স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে এতদিন বাবা হত্যার বিচার চাইতে পারিনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ায় ও তাদের শাস্তি দেখে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় দীর্ঘদিন পর বাবা হত্যার মামলা করেছি। এখন আমরা আশা করি যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালে আমরা বাবা হত্যার ন্যায় বিচার পাবো।
মামলার আইজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাখাওয়াত হোসাইন খান বলেন, বাদীর বাবার হত্যাকাণ্ডে পাকবাহিনীর সদস্য ছাড়াও চারজন স্থানীয় রাজাকার জড়িত ছিলেন। কিন্তু তিন রাজাকার মারা যাওয়ায় শুধু বরকত উল্লাহর বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাটিস্ট্রেট কোর্টে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক অভিযোগপত্রটি আমলে নিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছেন।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/বিএ/জেআইএম