মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দেওয়া মোস্তাফিজ পেলেন জিপিএ ৫
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সেই মো. মোস্তাফিজুর রহমান জিপিএ ৫ পেয়েছেন।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়। মোস্তাফিজ গৌরীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলার আমান উল্লাহ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালে মোস্তাফিজের বাবা বিপ্লব আকন মারা যান। তার মা নয়াখালী মাটিভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লায়লা জেসমিন মুন্নী দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসার রোগে ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছিল পরিবার।
২ ডিসেম্বর থেকে শুরু মোস্তাফিজুরের এইচএসসি পরীক্ষা। তাই ছেলের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই ভারতে যাওয়ার কথা ছিল মায়ের। কিন্তু ১১ ডিসেম্বর রাতে তার মা মারা যান। মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখেই ১২ ডিসেম্বর এইচএসসির রসায়ন দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা দেন মোস্তাফিজ। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরে জানাজা শেষে তার মায়ের মরদেহ দাফন করা হয়।
ফলাফল পাওয়ার পর অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মোস্তাফিজ বলেন, আমার এ সাফল্য দেখে যেতে পারল না বাবা-মা। তাদের জন্য কিছু করার আগেই আমাকে রেখে চলে গেলেন তারা।
আমান উল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ মো. কাওসার উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ছেলেটি অত্যন্ত মেধাবী। পরীক্ষা চলাকালে ওর মা মারা যান। সেদিন মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে মোস্তাফিজ পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আমরাসহ গিয়ে ওর উপস্থিতিতে জানাজা সম্পন্ন করি। ২০২০ সালে অল্প বয়সে তার বাবা মারা যায়। আফসোস এ সাফল্য দেখে যেতে পারেননি তার বাবা-মা।
এসজে/জিকেএস