হাফেজদের জন্য বিনামূল্যে খাবার মিলে যে হোটেলে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ভাই ভাই হোটেলের সামনে ঝুলানো আছে ফেস্টুন

কোরআনের হাফেজ ও দুস্থদের গত এক বছর ধরে বিনামূল্যে খাবার খাইয়ে আসছে শেরপুর সদর হাসপাতালের সামনে অবস্থিত ভাই ভাই হোটেল ও রেস্তোরাঁ। করোনাকালে এ সেবা চালু হলেও সবসময়ের জন্য চলমান রাখতে চান প্রতিষ্ঠানটির মালিক মাহমুদুল হাসান রনি।

হোটেলের সামনে ঝুলানো ফেস্টুন এরইমধ্যে সবার নজর কেড়েছে। প্রতিদিন দুপুরে অন্তত ১০-১৫ জন হাফেজ ও দুস্থ এখানে বিনামূল্যে খেতে আসেন। হোটেলের মালিক থেকে কর্মচারী সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে বিনামূল্যে তাদের সেবা দিচ্ছেন।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, হোটেলে খাবার খাচ্ছেন দুজন হাফেজ। তারা বলেন, আমরা রনি ভাইয়ের হোটেলে গত তিন মাস ধরে দুপুরের খাবার খাই। আমাদের বাড়ি মাদরাসা থেকে অনেক দূরে। তাই রনি ভাই আমাদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

হাফেজদের জন্য বিনামূল্যে খাবার মিলে যে হোটেলে

ভাই ভাই হোটেল

শুধু তাই নয়, জেলা হাসপাতালের সামনে হওয়ায় প্রতিদিন দুঃস্থ রোগীদের আত্মীয়রাও এখানে বিনামূল্যে খাবার খেতে পারছেন। শেরপুর সদরের ছয় নং চরের মোমিন মিয়া তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন জেলা হাসপাতালে। তার স্ত্রী মহিলা কেবিনে ভর্তি। দরিদ্র হওয়ায় মোমিন মিয়াও এ হোটেলের খাবার খাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি আগে জানতাম না এই হোটেলের বিষয়ে। হাসপাতালে একজন বললেন, সেটা শুনে আমি এখানে এসে এই হোটেল মালিকের সহযোগিতায় বিনামূল্যে দুপুরের খাবার খেলাম।

এরইমধ্যে এই ভিন্নধর্মী সেবার উদ্যোগ নজরে এসেছে সমাজের বিত্তবানদের। অনেকেই রনি ও তার পরিবারের এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন। মানবাধিকারকর্মী নাঈম ইসলাম বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। এই প্রবাদটি আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু এখনো কিছু মানুষ আছেন, যারা মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ভাই ভাই হোটেল ও রেস্তোরাঁর এই উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ও ভালো। পৃথিবীতে ও আখিরাতের জন্য এই কাজের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তা তাদের সহায় হবেন।

প্রতিষ্ঠানটির মালিক মালিক মাহমুদুল হাসান রনি বলেন, ‘এ হোটেল আমার বাবা দেখাশোনা করতেন। এখন আমি করি। গত এক বছর থেকে হাফেজ এবং দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করছি। আল্লাহ রহমত করলে এই কাজটুকু সারাজীবন করে যেতে চাই।’

এই মহৎ ভাবনার শুরুর প্রসঙ্গে রনি বলেন, ‘করোনাকালে কয়েকজন মাদরাসার ছাত্র আমাদের এখানে নিয়মিত দুপুরের খাবার খেতে আসতো। হঠাৎ করেই আমার মাথায় আসে ইচ্ছা থাকলেও সব সময় হাফেজদের বাসায় ডেকে খাবার খাওয়ানো সম্ভব হয় না। কিন্তু ইচ্ছা করলে হোটেলে খাওয়ানো সম্ভব। সেই ভাবনা থেকেই এ ব্যবস্থা।’

ইমরান হাসান রাব্বী/এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।