চুয়াডাঙ্গায় গরমে কদর বেড়েছে তালশাঁসের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ০৯ জুন ২০২২

চলছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চুয়াডাঙ্গার বাজারেও আম, লিচুসহ হরেক রকমের মৌসুমি ফলের দেখা মিলছে। সেই সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে সুস্বাদু তালশাঁসও। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে বাড়ছে ফলটির কদর।

চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের অলিগলিসহ উপজেলাগুলোর বিভিন্ন বাজার এলাকার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস। একটি শাঁস আকারভেদে ৪-৫ টাকা এবং একটি তাল ১০-১৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

বিক্রেতাদের দাবি, আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্য ফলের ক্ষেত্রে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তালশাঁসে এসবের প্রয়োজন হয় না। তাই ভেজালমুক্ত তালশাঁসের কদর বেশি।

চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের কোর্ট মোড়ে তালশাঁস বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী আলী কদর। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে গাছমালিকদের কাছ থেকে তাল সংগ্রহ করেন। পরে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরসহ গ্রাম এলাকার বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেন।

কদর আলী বলেন, প্রতিবছরই এ সময়ে আমরা তালশাঁস বিক্রি করি। গরমের এ দিনে বিক্রিও হয় ভালো। দাম ভালো পাওয়া যায়। সারাদিনে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকার তালের শাঁস বিক্রি হয়। এতে এক হাজার টাকা মুনাফা হয়।

চুয়াডাঙ্গায় গরমে কদর বেড়েছে তালের শাঁসের

কথা হয় তাল ব্যবসায়ী লিয়াকত আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, তালগাছ থেকে ফল কেটে আনা কষ্টকর বিষয়। অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে কেটে আনতে হয়। একটি গাছে ৫০০-৭০০টি তাল পাওয়া যায়। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই তালশাঁস বিক্রি শুরু হয়েছে। আরও কিছুদিন চলবে।

জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারে তালশাঁস কিনতে আসা রকিবুল ইসলাম বলেন, গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালশাঁস অনেক উপকারী। এর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। খেতেও সুস্বাদু।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, এ বছর তালের ভালো ফলন হয়েছে। জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের দুধারে ও খালের পাড়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে তালের চারা রোপণ করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় গরমে কদর বেড়েছে তালের শাঁসের

তিনি বলেন, তালগাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো এ গাছ বজ্রনিরোধক। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের তালগাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আওলিয়ার রহমান বলেন, তালশাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমের দিনে তালশাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালশিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে।

তিনি বলেন, তালে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালশাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে। চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।

সালাউদ্দীন কাজল/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।