বাস না পেয়ে ট্রাক-পিকআপে করে বাড়ি ফেরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:০৮ পিএম, ০৯ জুলাই ২০২২

একদিকে অতিরিক্ত ভাড়া, তার ওপর পরিবহন সংকট—এমন পরিস্থিতিতে ট্রাক-পিকআপে চড়েই ঢাকা ত্যাগ করছেন ঘরমুখো যাত্রীরা। শনিবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া টোলপ্লাজায় ট্রাক-পিকআপে চড়ে প্রচুর সংখক যাত্রীদের আসতে দেখা যায়। এসব যানবাহনে চড়েই আসা যাত্রীদের মধ্যে শ্রমিক ও নিম্নআয়ের মানুষই বেশি। শুক্রবারও (৮ জুলাই) দেখা যায় একই চিত্র।

যাত্রী ও ট্রাকচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ যাত্রীরাই উঠেছেন রাজধানীর কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে। বিশেষ করে পোস্তগোলা এলাকা থেকে। যাচ্ছেন দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে।

jagonews24

পোস্তগোলা থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা ও ফরিদপুরে ভাঙ্গা পর্যন্ত চলছে এসব পিকআপ-ট্রাক। দূরত্ব অনুযায়ী ১০০-৫০০ টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।

কিছু ট্রাকে নারী ও শিশু যাত্রীদেরও দেখা যায়। ট্রাক-পিকআপে রাখা মালামালের ওপর ঠাঁই হয়েছে তাদের। বাস কিংবা অন্য যানবাহন থেকে তুলনামূলক কম ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের। তবে মাথার ওপর তীব্র রোদ সহ্য করে দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে।

রিয়াজুল ইসলাম নামের একজন যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ ৫০০ টাকা দিয়ে যাচ্ছি। সকাল থেকে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু কোনো বাস পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে পিকআপে যাচ্ছি।’

jagonews24

ট্রাকচালক হৃদয় বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে যাত্রী তুলতে তুলতে মাওয়া পর্যন্ত আসছি। যাবো সেতুর ওপার। তবে যেখান থেকেই যাত্রী নিই ভাড়া ১০০ টাকা। আমার ট্রাকে ৩০-৩৫ জন আছে এখন।’

আরেক যাত্রী বলেন, ‘বাসে ১০০ টাকার ভাড়া আজ ৩০০ টাকা, ৩০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা। রাত পোহালেই তো ঈদ। তাই আজ যেতেই হবে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবো, গরু কোরবানি দেবো। যা পাইছি তাই দিয়ে যাইতাছি। কষ্ট করেই যেতে হচ্ছে।’

jagonews24

‘টাকা লাগলে বেশি দিতাম কিন্তু ঢাকায় তো বাস কাউন্টারে হুড়োহুড়ি। বেশি ভাড়া লাগে দিতাম। কিন্তু বাধ্য হয়ে কষ্ট করেই যেতে হচ্ছে’, বলেন ইলিয়াস হোসাইন নামের একজন যাত্রী।

এদিকে রাজধানীতে পশু বিক্রি করতে আসা প্রচুর সংখ্যক কৃষক পর্যায়ের মানুষকেও ট্রাকে চড়ে গ্রামে ফিরতে দেখা যায়। তাদের কয়েকজন জানান, গ্রাম থেকে তারা কোরবানির হাটে পশু নিয়ে এসেছিলেন। প্রতি দলেই ৫-৭ জন করে। ৫-৬টি দল মিলে একটি ট্রাক ভাড়া করে বাসায় ফিরছেন। তাদের একজন বললেন, ‘ঢাকার মানুষই তো গাড়ি পায় না, আমরা পাবো কীভাবে?’

jagonews24

অন্যদিকে ঈদযাত্রার আজ শেষ দিনে সকালে দক্ষিণবঙ্গগামী যাত্রীবাহী যানবাহনের কিছুটা চাপ থাকলেও দুপুরে স্বাভাবিক হয়ে এসেছে পদ্মা সেতুর মাওয়া টোলপ্লাজার চিত্র। যানবাহনের চাপ নেই। যারা আসছেন তারা সহজেই টোল দিয়ে সেতু পারি দিয়ে গন্তব্যে ছুটছেন।

পদ্মা সেতুর সাইট অফিস নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, গতকাল দক্ষিণবঙ্গগামী মানুষের বেশ চাপ ছিল। তবে আমরা সফলভাবেই সে চাপ সামাল দিতে পেরেছি। গতকাল বিকেল থেকে চাপ কমতে শুরু করে। আজও সে ধারা অব্যাহত আছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। যারা আসছেন তারা কোনো বাধা ছাড়াই সেতু পারি দিতে পারছেন।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।