ভৈরবে ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২২
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইঁদুরের আক্রমণ ঠেকাতে ধানক্ষেতে পলিথিন বেঁধে দিয়েছেন কৃষকরা

চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমনক্ষেতে ব্যাপকহারে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা বলছেন, বিভিন্ন ওষুধ দেওয়া, ফাঁদ পাতাসহ নানান ব্যবস্থা নিলেও কমছে না ইঁদুরের আক্রমণ। এমতাবস্থায় ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।

এদিকে কৃষি কর্মকর্তাদের দাবি, ধানের জমিতে ইঁদুর নিধনে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, ভৈরবের রসুলপুর, সাদেকপুর, ভবানীপুর, তেয়ারিচরসহ সাতটি ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামের আমনক্ষেত ইঁদুরের আক্রমনে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব জমি থেকে ধান পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের কৃষক শাইস্ত মিয়া বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেশিভাগ জমিতেই আমনের চাষ করেছি। আমাদের স্বপ্ন ছিল, ধান চাষ করে বাড়তি ফসল হিসেবে ঘরে তুলবো। কিন্তু আমাদের সে স্বপ্নে হানা দিয়েছে ইঁদুর।

আমার ১০ বিঘা ধানের জমির মধ্যে পাঁচ বিঘার অবস্থা খারাপ। ইঁদুরে মাঠের সব গাছ কেটে ফেলছে। ওষুধ দিয়ে, ফাঁদ পেতেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

রসুলপুর গ্রামের কৃষক আলিম উদ্দিন বলেন, স্থানীয় এনজিও থেকে লোন নিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছিলাম। আশা ছিল, এ বছর ধানের ভালো ফলন হবে। কিন্ত ফলন আসার আগেই হানা দিয়েছে ইঁদুর।

‘প্রতিদিনই জমি থেকে ধানের গাছ কাটছে ইঁদুর। এর থেকে নিস্তার পেতে জমিতে পলিথিন বেধে দিয়েছি তাতেও ফল হচ্ছে না। যেভাবে গাছ বেড়ে উঠছিল, তাতে ধানের বাম্পার ফলন হতো। কিন্তু ইঁদুর যে হারে ধানগাছ কাটছে, তাতে ভালো ফলনের আশা ছেড়ে দিয়েছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, আমনের আগাম জাতের ধান গাছে এবার ইঁদুরের আক্রমণ বেশি। ইঁদুর নিধনে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে কৃষি অফিস।

‘কৃষি কর্মকর্তারা বাঁশের তৈরি প্রচলিত ফাঁদ, বিষ-ফাঁদ, ধানের জমিতে কলাগাছ পুতে দিয়ে ইঁদুরখেকো পেঁচা বসার জায়গা করে দেওয়ার মতো বিষয়গুলোতে কৃষকদের সহযোগিতা করছেন। এরই মধ্যে আমনের বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবে এরপরও আশা করা যায়, অবশিষ্ট জমিতে ভালো ফলন হবে।’

এ উপজেলায় এবার ২ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে আমন উৎপাদন হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করো হয়েছিল, কিন্ত অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ২৭০ হেক্টর জমি।

এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ উপজেলার কৃষকরা বাড়তি ফসল হিসেবে আমন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রধান ফসল হিসেবে এ এলাকার কৃষকরা বোরো ধানের আবাদ বেশি করে থাকেন।

কিশোরগঞ্জ/এসএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।