চাঁপাইনবাবগঞ্জে তীব্র শীত

‘গরীব মানুষ বাপু কাজে না গেলে খেতে পাবো না’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:০৯ এএম, ০৭ জানুয়ারি ২০২৩
তীব্র শীতেও কাজে বের হচ্ছেন মানুষ

পৌষের তীব্র শীতে কাঁপছে উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। পেটের দায়ে কনকনে শীতেও কাজে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পৌর এলাকার ইয়াসমিন বেগম বলেন, চার দিন ধরে এত শীত পড়ছে যে ঘরের বাইরে যাওয়া যায় না। এ অবস্থায় স্কুলে যেতে বাচ্চাদেরও অনেক কষ্ট হচ্ছে। শীতে কাঁপতে হয়।

শিবগঞ্জ উপজেলার সামসু নামে এক ইটভাটা শ্রমিক বলেন, ‘প্রতিদিন বাড়ি থেকে সাইকেলে ভাটায় কাজে যেতে হয়। কিন্তু কয়েকদিন থেকে তীব্র শীতের কারণে যেতে কষ্ট হচ্ছে। আর গরীব মানুষ বাপু কাজে না গেলে তো আর খেতে পাবো না। শত কষ্ট করেও কাজে যেতে হয়।’

cha-(3).jpg

তিনি আরও বলেন, ‘শীতে কাজ করাও কষ্ট। বৃহস্পতিবার হাত থেকে ইট পড়ে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছি। শীতের দিন না হলে এত ব্যথা পেতাম না।’

রানিহাটি এলাকার রাজমিস্ত্রি উজ্জল আলী বলেন, ‘সকাল ৮টার দিকে বাড়ি নির্মাণ কাজে যোগ দিতে হয়। তাই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি থেকে বের হই। কিন্তু গত তিনদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। এতে বেড়েছে শীতের দাপট। তাই সাইকেল চালিয়ে যেতে পারছি না। অটোরিকশায় প্রতিদিন ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে কাজে যাচ্ছি।’

পৌর শহরের চা দোকানি আব্দুল রাজ্জাক বলেন, ‘কয়েক দিনের ঘন কুয়াশা আর তীব্র ঠান্ডা জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দোকানের প্রায় সবই পানির কাজ। এ শীতের দিনে পানির কাজ করা যাচ্ছে না। কিন্তু কী করবো কাজ তো করতেই হবে।’

জেলা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মাহফুজ রায়হান জাগো নিউজকে বলেন, এ হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য বেড নেই। অথচ দু-একজন ছাড়া সব রোগীই শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। শীতকালীন রোটা ভাইরাসের কারণে শিশুদের ডায়রিয়া হচ্ছে। হিমেল হাওয়ায় রোটা ভাইরাসের প্রভাব বাড়ে। ফলে শিশুরা ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়।

cha-(3).jpg

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জাগো নিউজকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুক্রবার ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। হিমেল বাতাসও বইছে। ধারণা করা হচ্ছে আরও দু-তিন দিন এ বাতাস থাকতে পারে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার ৫ উপজেলাতেই বিতরণের জন্য কম্বল পাঠানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) বিতরণ করছেন। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কিছুটা কমে আসবে।

সোহান মাহমুদ/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।