শীতের তীব্র প্রকোপ

টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে কমছে না রোগীর চাপ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৮:১৪ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০২৩

তীব্র শীতের প্রকোপে টাঙ্গাইলের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল (সদর) হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। এসব রোগীদের ৮০ শতাংশই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। আর বাড়তি এ রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে, রোগীদের ভোগান্তি কমাতে সম্প্রতি টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ভবনে জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ১০০টি আসন স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সেসব রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে।

Tangail-4.jpg

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স,প্যারামেডিকস এবং দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মিলিয়ে ৪০১ জনের মধ্যে কর্মরত আছেন ৩২৮ জন। হাসপাতালের পদ ফাঁকা রয়েছে ৭৩টি। এর মধ্যে ৫৮ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছে ৪১ জন। ২৩৯ নার্সের স্থলে আছেন ২৩৩ জন। ৩২ জন প্যারামেডিকসের স্থলে আছেন ১৩ জন। এছাড়াও ৭২ জন দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর স্থলে রয়েছেন ৪১ জন।

হাসপাতালে শিশু রোগীর আসন সংখ্যা ২৫টি। তবে সোমবার (৯ জানুয়ারি) শিশু ওয়ার্ডের ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫১ জন। এর আগে শুক্রবার এ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৫ এবং শনিবার ৬৯ জন। ভর্তি শিশু রোগীদের ৮০ ভাগই ঠান্ডাজনিত সমস্যায় আক্রান্ত।

সোমবার হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৮৩ জন। এছাড়া শনিবার হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৪০৩ জন, আর রোববার ছিল ৪৪০ জন।

Tangail-4.jpg

শিশু ওয়ার্ডের বারান্দার ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছে ঘাটাইল উপজেলার ঘারিয়া গ্রামের রোজা মনি (৪)। শিশুটির মা লাবনী বলেন, প্রথমে ঠান্ডা কম ছিল বলে বাড়িতে ওষুধ খাওয়ানো হয়। হঠাৎ ঠান্ডার সঙ্গে খিচুনি দেখা দেওয়ায় রোজাকে সোমবার সকালে হাসপাতালে আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, সকালে ভর্তি হলেও রোজাকে চিকিৎসক দেখাতে পারিনি। তবে নার্সরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। এছাড়া ওয়ার্ডে বেড খালি না থাকায় বারান্দার ফ্লোরে ভর্তি রেখেই চিকিৎসা চলছে।

গাইনি ওয়ার্ডের বারান্দার আসনে ভর্তি মাহমুদনগরের পারবহুলী গ্রামের আর্জিনা বলেন, গত বৃহস্পতিবার প্রসবজনিত সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ওয়ার্ডের ভেতরে আসন খালি না থাকায় রাতে এই আসনটি দেওয়া হয়েছে

মেডিসিন বিভাগের ১০০টি আসন মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. লুৎফর রহমান আজাদ।

Tangail-4.jpg

তিনি বলেন, লিখিতভাবে আসনগুলো স্থানান্তর হয়নি। কেবল হাসপাতালের রোগীর চাপ কমাতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই আসনগুলোর রোগীদের চিকিৎসাসহ সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে জেনারেল হাসপাতাল।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, তীব্র শীতের কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া ও বড়রা অ্যাজমায় আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে প্রায় চারগুণ। এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।

তিনি বলেন, ক্রমাগত রোগীর চাপে রোববার থেকে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।

আরিফ উর রহমান টগর/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।