সিলেট জেলা পরিষদের ১২ কোটি টাকার জমি উদ্ধার
সিলেটে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন চার একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে বুলডোজার দিয়ে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে প্রায় ১৮ বছর পর জেলা পরিষদের চার একর জায়গা উদ্ধারে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এই জমির বর্তমান বাজারমূল্য ১২ কোটি টাকারও বেশি বলে জানা গেছে।
উচ্ছেদ অভিযানে সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসিব আহমেদ ও সূর্যসেন রায়, সার্ভেয়ার মফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বাদাঘাট বাজারে প্রায় ১৮ বছর আগে জেলা পরিষদের চার একর জায়গা একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল। একসনা লিজ অনুসারে এক বছর পর জায়গা জেলা পরিষদের আওতায় চলে আসার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। যারা লিজ নিয়েছিলেন, তারা নবায়নও করেননি। গত প্রায় দেড় যুগ ধরে সেখানে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি জায়গার বিষয়টি জেলা পরিষদের নজরে আসে। জায়গা উদ্ধারে স্থানীয় ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। পরে দোকানপাট ও মালামাল সরিয়ে নিতে নোটিশ ও সময় দেওয়া হয়। নোটিশের পর অনেকেই নিজেদের মালামাল সরিয়ে নেন। তবে অনেকেই সেখানে রয়ে গিয়েছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রোববার সকাল ১০টা থেকে বুলডোজার নিয়ে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। এতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। অভিযান শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের মালামাল সরিয়ে নেন। অভিযানে আধাপাকা ও টিনের প্রায় ৭০টি অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান বলেন, এখানে একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল এবং এখানে দোকানপাট নির্মাণের কোনো বিধি-বিধান ছিল না। তারপরও ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন।
তিনি বলেন, একসনা লিজের শর্ত অনুসারে, কোনো অবস্থায় লিজ নেওয়া জায়গায় স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। এসব শর্তাবলী কেউ লঙ্ঘন করলে লিজ আপনা আপনি বাতিল হয়ে যায়। এসব শর্ত রেখেই এখানে একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লিজের শর্ত ভঙ্গ করে এখানে স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়।
এদিকে, বাদাঘাট বাজারে থাকা একটি মসজিদের জন্য জেলা পরিষদের জমি চান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, জেলা পরিষদের জায়গার নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা অনুসারে বাজার এলাকায় থাকা মসজিদকে জমি দান করা হবে, আর্থিকভাবেও সহযোগিতা করা হবে। এ মসজিদের নাম হবে জেলা পরিষদ-বাদাঘাট বাজার মসজিদ।
সিলেট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ জানান, জেলা পরিষদের মাসিক সভায় এখানে একটি মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরইমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে মার্কেট নির্মাণের অনুমোদন মিলেছে।
ছামির মাহমুদ/এমআরআর/জিকেএস