পায়রা সমুদ্র বন্দর

সমান গতিতে এগিয়ে চলেছে অবকাঠামো ও রাজস্ব

আব্দুস সালাম আরিফ আব্দুস সালাম আরিফ , জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ০৪:৩৯ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। এটি চালু হলে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে এখানে কন্টেইনার পরিবহনসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। এ বছরের জুনে বন্দরের প্রথম টার্মিনালসহ আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতের প্রকল্পটি শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত থাকলেও তা হচ্ছে না। তবে ২০২৩ সালে বিগত বছরের থেকে ১৫ গুণ বেশি আয় করতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সমুদ্র বন্দরের ফলক উন্মোচন করেন। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট বন্দরের আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই থেকে শুরু করে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে ২৯১টি বিদেশি জাহাজ নোঙ্গর করে। যার মধ্যে ২২৬টি জাহাজে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা এবং ৬৫টি জাহাজে অন্যান্য পণ্য পরিবহন করা হয়।

pai1

আরও পড়ুন- ফেব্রুয়ারির শুরুতেই পর্যটকে টইটুম্বুর কুয়াকাটা

এসব বাবাদ পায়রা বন্দরের আয় হয় ৬৭ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৮ টাকা। আর কাস্টমস কর্তৃক আয় হয় ৬৮৯ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার ৪৮৭ টাকা।

তবে এর মধ্যে ২০২২ সালে সব থেকে বেশি জাহাজ এই বন্দর ব্যবহার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালকে পায়রা বন্দরের বছর হিসেবে ঘোষণা করেছেন পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান। আর এই বছরেই গত বছরের থেকে ১৫ গুণ বেশি আয় করতে চায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

pai1

সম্প্রতি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রামনাবাদ পাড়ে গিয়ে দেখা যায় সেখানে চলছে পায়রা বন্দরের উন্নয়নের মহাযগ্য। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই বন্দরের জন্য প্রথম টার্মিনাল, বন্দরের ইয়ার্ড, ছয় লেনের সংযোগ সড়কসহ আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার কাজ চলছে। কারো যেন দম ফেলার সুযোগ নেই। বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলীসহ দেশি বিদেশি কনসালটেন্টরাও এখানে কাজ করছেন। চীনের ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান এবং কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলো এসব উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করছে।

আরও পড়ুন- পায়রা বন্দরে চালু হলো প্রিপারেটরি স্কুল

পায়রা বন্দরের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) এস এম ওমর ফারুক জানান, সার্ভিস জেটি এবং জেটি সংলগ্ন সড়কের কাজ ৯৮.৫০ শতাংশ, ইয়ার্ড এবং জেটির কাজ ৬৭ শতাংশ, ৬ লেনের সংযোগ সড়ক ও ব্রিজের কাজ ৩৫ শতাংশ এবং বানতিপাড়া বাজার থেকে সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ছয় লেনের সড়কের কাজ ৮৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আন্ধারমানিক নদীর ওপর ছয় লেনের সেতু নির্মাণের কাজ।

pai1

পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, পায়রা বন্দরে যেমন অপারেশন কার্যক্রম চলছে পাশপাশি নির্মাণ কাজও চলছে। একাটি বন্দরের নির্মাণকাজ বড় একটি বিষয়। একটি বন্দর রাতারাতি গড়ে ওঠে না, এটা গড়ে উঠতে সময় লাগে। গত সাত-আট বছরে পায়রা বন্দর অনেক দূর এগিয়ে গেছে এবং সেটা সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্টপোশকতা ও দিকনির্দেশনায়। সে কারণে যারা কাজ করছেন তারাও আগ্রহ পাচ্ছেন। এরইমধ্যে বন্দরে এক হাজারের বেশি শিপ হ্যান্ডেলিং করতে সক্ষম হয়েছে এবং ২০২২ সালে তা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ২০২৩ সালকে বলি পায়রা বন্দরের বছর। আমাদের চিন্তা এই বছরে এই বন্দরে রাজস্ব আয় ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশি বৃদ্ধি পাবে। এ বছরই আমরা বন্দরের প্রথম টার্মিনালটি চালু করবো।

আরও পড়ুন- পুলিশের পতিত জমিতে সবুজের সমারোহ

এদিকে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশপাশি পায়রা বন্দরে জাহাজ প্রবেশের জন্য ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজও চলমান রয়েছে। বেলজিয়ামের ড্রেজিং প্রতিষ্ঠান জান ডে লুন এটি বাস্তবায়ন করছে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।