সোনালী মুকুলে স্বপ্নে বিভোর পাহাড়ের চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ০৭:০৮ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি বিভিন্ন ফলচাষের জন্য বেশ উপযোগী। পাহাড়ের আমের চাহিদা দেশে এবং বিদেশে বেশ প্রসিদ্ধ। ফেব্রুয়ারি মাসেই মূলত আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। সে অনুসারে এখন পাহাড়ে আম গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে সোনালী মুকুল।

কৃষক এবং কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ভরা শীতে যদি আমের মুকুল আসে তাহলে ঘন কুয়াশার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু এ বছর রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি আম বাগানে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের বাগানে আমের মুকুল এসেছে।

আরও পড়ুন- কদর বাড়ছে পাহাড়ি ফুল ঝাড়ুর

মুকুলের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। যেদিকে দু’চোখ যায় সেদিকেই দেখা যাচ্ছে সারি সারি আম বাগানে গাছে গাছে সোনালী রঙের মুকুল। শীতের বিদায়বেলায় আমচাষিরাও গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার আমগাছে ভালো মুকুল আসায় আমের ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা।

কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাফছড়ি এলাকার আমচাষি ১০০নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার মাস খানেক আগে থেকেই আমের মুকুলের দেখা মিলেছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর গাছে ব্যাপক পরিমাণ মুকুল এসেছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি যদি এমন ভালো থাকে তাহলে আমের ফলন অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক ভালো হবে বলে আশা করছি।

চাষি আপাই মারমা জানান, দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলের আম্রোপালি ও রূপালী জাতের আমের চাহিদা অনেক বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার পরিচর্যা খরচ বেশি বহন করতে হচ্ছে। বিশেষ করে কীটনাশক, সেচের খরচ আর শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় আমচাষিদের দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। এতে আমের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আরও পড়ুন- গোলরক্ষক রুপনার মায়ের হাতে নতুন ঘরের চাবি

শিক্ষকতার পাশাপাশি বেশ কয়েক বছর ধরে শখের বসে আমবাগান করে আসছেন মধু মঙ্গল তঞ্চঙ্গ্যা।

তিনি জানান, তার বাগানে রাইখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে সংগ্রহ করা দেশীয় বারি-১, বারি-২, বারি-৩, বারি-৪ এবং বারি-৮ জাতের আমগাছ রয়েছে। গাছগুলোতে ভালোই মুকুল দেখা দিয়েছে। গতবছর ভালো ফলন না পেলেও এবার মুকুল অনুযায়ী ভালো ফলনের আশা করছি।

বাগানে দেশীয় জাতের পাশাপাশি বিদেশি জাপানি জাতের বিখ্যাত এবং মূল্যবান মিয়াজাকি আম গাছের চারাও রোপণ করেছেন বলেও জানান তিনি। এছাড়া আমেরিকান রেড আইভরি জাতের আমগাছের চারাও তার বাগানে রয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এবছর প্রতিটি গাছে ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।

আরও পড়ুন- রাঙ্গামাটির দ্বীপ-হ্রদ পাড়ে তাঁবুবাসে ঝুঁকছেন পর্যটকরা

কাপ্তাই কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাপ্পা মল্লিক জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাপ্তাই উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত এসব আমের যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে। প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন জেলায় কাপ্তাই থেকে ব্যাপক পরিমাণ আম বিক্রি করা হয়। তবে এবছর শীতের প্রভাব আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জানুয়ারির শেষ থেকেই বিভিন্ন আম বাগানের গাছে গাছে মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে কিছু বাগানের কোনো কোনো গাছে পরিপূর্ণ মুকুল আসতে আরও কিছু সময় লাগতে পারে। আশা করা যাচ্ছে এবছরও কাপ্তাইয়ের আম চাষিরা আমের ভালো ফলন পাবেন এবং লাভবান হবেন।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।