লক্ষ্মীপুরে শিক্ষককে প্রকাশ্যে মারধর : শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তিতারকান্দি ভূঁইয়ারহাট ফাজিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মোর্শেদ আলমকে শ্রেণিকক্ষ থেকে তুলে নিয়ে প্রকাশ্যে মারধর করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্লাশ বর্জন করেছে। শনিবার সকালে তারা মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষের দরজাগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এসময় তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে স্মারকলিপি দেয়। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমর কান্তি বসাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে, ক্লাসে এক ছাত্রীকে শাসন করার জের ধরে উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষক মোর্শেদ আলমকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শোকজ করেছেন। অন্যদিকে, বিষয়টি সুরাহাকল্পে শনিবার দুপুরে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠক করেছেন। সেখানে রোববার দুপুর ১২টায় অভিযুক্তরা মাদ্রাসায় এসে লাঞ্ছিত হওয়া শিক্ষকের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানান, মাদ্রাসার শিক্ষক মোর্শেদ আলম বৃহস্পতিবার সকালে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে (সুমি আক্তার) ক্লাসে শাসন করেন। এ খবর পেয়ে দুপুরে ছাত্রীর বাবা তিতারকান্দি গ্রামের আবদুর রহিম বহিরাগত দলবল নিয়ে মাদ্রাসা আসেন। এসময় মোর্শেদ সপ্তম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছিলেন। তারা শ্রেণিকক্ষে ঢুকে গালমন্দ করে ওই শিক্ষককে তুলে মাঠে নিয়ে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এর জের ধরে শনিবার সকালে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জড়ো হন।
এসময় তারা মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষের দরজাগুলোতে তালা ঝুলিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবদুর রহিমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
তিতারকান্দি ভূঁইয়ারহাট ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ ন ম মোসলেহ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শনিবার কোনো ক্লাস হয়নি। বিচারের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করা হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টায় অভিযুক্তরা বিদ্যালয়ে এসে লাঞ্ছিত হওয়া শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষক মোর্শেদ আলমকেও শোকজ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমর কান্তি বসাক জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। রোববার থেকে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কাজল কায়েস/এমজেড/আরআইপি