সিলেট
এসএসসি পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র অফিসে বসে পূরণ করলেন শিক্ষক
সিলেটের জাফলংয়ে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে উত্তরপত্র এবং ওএমআর শিট পূরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই কেন্দ্রের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার চারটি ভিডিও ফুটেজ এসেছে জাগো নিউজের হাতে। বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় হচ্ছে উপজেলাজুড়ে।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ঘটনাটি গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয় পার্শ্ববর্তী হাজী সোহরাব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। পরীক্ষা শেষে তাদের খাতা মূলকেন্দ্র তথা আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়।
ভিডিওতে দেখা গেছে, পরীক্ষার পর আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল পরিদর্শক ও প্রতিষ্ঠানের দুজন খণ্ডকালীন শিক্ষক কাওসার আহমেদ ও আল মেহরাব উত্তরপত্র পূরণ করছেন। এসময় কেন্দ্রের বারান্দায় কিছু শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। অফিসে একাধিক শিক্ষার্থীকে ঘোরাফেরা করতেও দেখা যায়। এক ছাত্রকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে ‘বাবু স্যারের’ সঙ্গে দেখা করতে বলেন এক শিক্ষক।
২৭ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন শিক্ষক বৃত্ত ভরাট করছেন। ২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ছাত্রীকে বিভাগ জিজ্ঞাসা করছেন এক শিক্ষক। আরেক ছাত্রকে কেউ একজন ধমক দিচ্ছেন। ওএমআর শিট ঠিক করে রাখতে দেখা গেছে আরও একজনকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক কেন্দ্রের খাতা ঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়া হলেও আমির মিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের খাতা দেরিতে পোস্ট অফিসে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ থেকে সন্দেহ হওয়ার পর গোপনে কে বা কারা কেন্দ্রে অবস্থান নিয়ে ভিডিও ধারণ করে। পরে সেসব ভিডিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্নজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। রোববার রাতে ভিডিও প্রকাশ পেলে তোলপাড় শুরু হয়।
এ বিষয়ে জাফলং আমির মিয়া উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম মনিরুজ্জামান বলেন, ওএমআর ভরাট করার বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। তবে যেহেতু বিষয়টির তদন্ত চলছে তাই এ ব্যাপারে আর কিছু বলা যাচ্ছে না।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান জানান, ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার পর রোববার রাতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে তাৎক্ষণিকভাবে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক এবং উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করে গঠিত কমিটি তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার রমা দাস জাগো নিউজকে বলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকরা ওএমআর শিট ভরাট করছেন এরকম ভিডিও এখন ভাইরাল। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিতে আমাকে সদস্য করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে আমাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে আজ অন্য কাজ থাকায় আমরা তদন্ত শুরু করতে পারিনি।
ছামির মাহমুদ/এমএইচআর