রাজশাহীতে জমতে শুরু করেছে পশুর হাট

রাজশাহীতে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা বেড়েছে। জেলাতে এবার যে পরিমাণ পশুর চাহিদা রয়েছে তার চেয়েও বেশি পশু লালনপালন করা হয়েছে। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে এবার অন্য জেলারও চাহিদা মেটাবে রাজশাহীর গরু-ছাগল।
এদিকে, ঈদ সামনে রেখে রাজশাহীর হাটগুলোতে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির গরু-ছাগল। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাও আসছেন। দূরের জেলা থেকে আসছেন ব্যাপারীরাও।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় গতবছর ৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭৭টি পশু কোরবানি করা হয়। এবারও এই সংখ্যক কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রাণিসম্পদের কাছে কোরবানিযোগ্য প্রাণীর নিবন্ধন হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৬৪৫টি। এর মধ্যে গরু ও মহিষ রয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ২৮৬টি। এছাড়া ছাগল রয়েছে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৫৯টি।
বর্তমানে জেলায় চাহিদার তুলনায় ৭৫ হাজারেরও বেশি কোরবানির পশু রয়েছে। এগুলো অন্য জেলার চাহিদা মেটাবে। কোরবানির আগে এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। রাজশাহী জেলাতে ছোট-বড় মিলে এবার ১৬ হাজার ৫৪৫টি খামারে এসব কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে।
রাজশাহীর সওদাগর এগ্রো ফার্মে এবার ৩০টি গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে সব গরু বিক্রি করা হয়েছে। সওদাগর এগ্রো ফার্মের মালিক আরাফাত রুবেল বলেন, এবার ৩০টি গরু মোটতাজাকরণ করা হয়েছিল। সব গরু বিক্রিও করা হয়েছে। এবার বাজার মূল্য ভালো পেয়েছি।
এম এম এগ্রো ও সাফিন এন্টারপ্রাইরে মালিক মোশারফ হোসেন জানান, চলতি বছরে তারা ৩৫টি গরু মোটাতাজাকরণ করেছেন। এরইমধ্যে ১৫টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। গড়ে ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা দাম পেয়েছেন।
তিনি বলেন, আগের বছরের মতো এবার লাভ হয়নি। একটু কম হয়েছে। মূলত খাবারের দামবৃদ্ধির কারণেই এটি হয়েছে। ঈদের আগেই বাকি গরু বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
এদিকে, ঈদ সামনে রেখে বেচাকেনা বাড়ছে রাজশাহীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট সিটি হাটে। প্রতিদিনই এখানে আসছে নতুন নতুন গুরু এবং ক্রেতারা। এরইমধ্যে জেলার বাইরে থেকে পাইকারও আসতে শুরু করেছেন। তাদের মাধ্যমে গরু যাচ্ছে রাজশাহী জেলা ছাড়িয়ে অন্য জেলায়।
রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার আগেই হাট জমছে। এরই মধ্যে বাইরে থেকে ব্যাপারীরাও আসতে শুরু করেছেন। হাটে পশু আসছে। ঈদের কিছুদিন আগে থেকেই মূলবাজার জমে উঠবে। তবে এবার দেশি গরুর চাহিদা ও দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে গতবারের মতোই এবারও কোরবানির পশুর চাহিদা আছে। তবে জেলায় এবারও বাড়তি পশু লালনপালন হয়েছে। এরইমধ্যে আমরা ডাটাবেজ করতে শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত জেলাতে ৭৫ হাজারেরও বেশি বাড়তি কোরবানির পশু রয়েছে। কোরবানির আগে এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এবারও অন্য জেলার চাহিদা মেটাবে রাজশাহীর পশু।
সাখাওয়াত হোসেন/এমআরআর/জেআইএম