ময়লার দুর্গন্ধ নিয়েই বসবাস

মোবাশ্বির শ্রাবণ মোবাশ্বির শ্রাবণ , জেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:৩০ এএম, ০৫ জুন ২০২৩

অডিও শুনুন

ময়লার দুর্গন্ধ নিয়েই সকাল হয় আবার ময়লার দুর্গন্ধ নিয়েই তাদের রাত। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টায় তাদের ময়লার দুর্গন্ধ নিয়েই থাকতে হয়। এ থেকে বাঁচার যেন কোনো উপায় নেই। ময়লার দুর্গন্ধের কারণে অনেক সময় আত্মীয়-স্বজনও বেড়াতে আসেন না।

এ যেন মহাদুর্ভোগ পড়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচটি এলাকার প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা। গত ছয় বছর ধরেই তাদের এই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা তাদের বারবার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ছয় বছর ধরেই নারায়ণগঞ্জ শহরের শহীদনগর এলাকার একটি খোলা জায়গায় সিটি করপোরেশনের সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। আর এই শহীদনগর এলাকার পাশেই রয়েছে আল আমিন নগর, তামাকপট্টি, ডিয়ারা ও সুকমপট্টি এলাকার। ওইসব এলাকার বাসিন্দাদেরও প্রতিদিনই ময়লার দুর্গন্ধের সঙ্গেই বসবাস করতে হয়।

শহীদনগর এলাকার রাসেল নামে এক বাসিন্দা বলেন, বাতাসের সঙ্গে ময়লার দুর্গন্ধ ছড়ায়। এলাকার অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ছোট শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাঝে মধ্যে এখানে আগুন ধরিয়ে দেয় কিছু বখাটে। আর এই আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। যার কারণে বয়স্ক মানুষজনের অনেক কাশি হয়। আমরা জনপ্রতিনিধির কাছে বারবার বলে আসছি, এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই। কিন্তু কোনো সমাধান পাইনি।

তিনি আরও বলেন, এই ময়লার দুর্গন্ধে শুধু আমরাই ভোগান্তির শিকার না। আমাদের সঙ্গে আল আমিন নগর, তামাকপট্টি, ডিয়ারা ও সুকমপট্টি এলাকার মানুষ এই ভোগান্তির শিকার। এলাকাগুলোতে কোনো আত্মীয়-স্বজন আসতে চায় না। আসলেও দুর্গন্ধের কারণে থাকতে পারেন না। বর্তমানে এসব এলাকায় কোনো মেয়ে বিয়ে দিতে চায় না কেউ।

আবুল বাশার নামে এক বাসিন্দা বলেন, যখন প্রথম এখানে ময়লা রাখে তখন আমাদের বলা হয়েছিল কিছুদিনের জন্য ময়লা রাখা হচ্ছে পরে সরিয়ে দেবে। আর এখন ময়লা-আবর্জনা রাখতে রাখতে পাহারের মতো উঁচু করে ফেলেছে। যার কারণে বৃষ্টি আসলেই সব মাছি বাসার ভেতরে চলে আসে। ময়লার দুর্গন্ধের কারণে রাতে ঘুমানো যায় না। ভোটের সময় বলেছিল নির্বাচনের পর এখানে আর ময়লা ফেলা হবে না। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর খবর নেই।

সোহেল নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, এই ময়লার দুর্গন্ধের কারণে আমার ঘরের সব সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমরা এই ময়লার দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে চাই।

এ বিষয়ে পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আগে ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করে ময়লা-আবর্জনা ফেলা উচিত ছিল। আমরা সিটি করপোরেশনকে বলবো, অতিদ্রুত এ বিষয়ে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আফসানা আফরোজ জাগো নিউজকে বলেন, এটা সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। তবে কবে নাগাদ হতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারছি না।

১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না জাগো নিউজকে বলেন, এটার সমাধান হচ্ছে ময়লা ফেলা বন্ধ করা। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছি। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুতই এটার সমাধান হবে। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। ময়লার দুর্গন্ধ দূর করার জন্য আমি জনগণের সঙ্গেই থাকবো।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ময়লাগুলো সরানোর বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলছে। এখান থেকে ময়লা সরিয়ে নেওয়া হবে।

এমআরআর/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।