শিক্ষিকাকে ঝাড়ুপেটা করার হুমকি দিলেন প্রধান শিক্ষক
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বহরমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ ওয়াহেদ মৃধার বিরুদ্ধে এক সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগও রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এমনকি বিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাত, বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে অন্য সহকারী শিক্ষক দিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করানো ও বিদ্যালয়ে দেরিতে আসার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এসবের প্রতিবাদ করায় এক সহকারী শিক্ষিকাকে ঝাড়ুপেটা করানোর হুমকি দিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষিকা মনিরা আক্তার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেনের মাধ্যমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ তিনি বহরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। শুরু থেকেই প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ওই প্রধান শিক্ষক তার সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করেন। প্রথমদিকে কাউকে না জানিয়ে মুখ বুঝে সহ্য করলেও এখন বাধ্য হয়ে অভিযোগ করেছেন। দিনদিন তার অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নোংরা ভাষায় গালমন্দ বেড়েই চলেছে।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় যথারীতি তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। প্রধান শিক্ষক ও অন্য সহকারী শিক্ষকরা সকাল সাড়ে ৯টার পর স্কুলে আসেন। এরপর হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে অকথ্য ভাষায় মা-বাবা তুলে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন দিয়ে তাকে ঝাড়ুপেটা করানোর হুমকি দেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে দিনদিন বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও দিনদিন কমে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজে যে বরাদ্দ এসেছে তা প্রধান শিক্ষক আত্মসাত করেছেন। তিনি তার আপন বোনকে (সরকারী শিক্ষিকা) এই বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে এনেছেন। এতে তিনিও ভাইয়ের ক্ষমতা দেখিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেন না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এম এ ওয়াহেদ মৃধা মুঠোফোনে বলেন, আমি স্কুলের বাইরে আছি। আপনার কথা থাকলে পরে স্কুলে আসেন।
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আক্তার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ওই ক্লাস্টারের দায়িত্বরত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে (এটিও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস