দুর্নীতির অভিযোগে চেয়ারম্যানকে অনাস্থা দিলেন ৯ ইউপি সদস্য
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগে নবাবপুরের ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা আলমীরকে অনাস্থা প্রদান করেছেন ৯ ইউপি সদস্য।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের কাছে চেয়ারম্যানের অনাস্থাপত্র প্রদান করেন ওই ৯ ইউপি সদস্য। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ বিষয়ে তারা সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউপি সদস্য কাবিল উদ্দিন বলেন, গত ২০ আগস্ট রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের ১০টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের মধ্যে বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় নবাবপুর ইউনিয়নে ২৬ লাখ টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলেও ১৫% কাজও করা হয়নি। কাজে শ্রমিকদের তালিকা করা হলেও তাদের দিয়ে কাজ করা হয়নি। শ্রমিকদের নামে বিকাশ একাউন্ট করে সব সিম নিজের কাছে রেখে অর্থ উত্তলন করেন চেয়ারম্যান।
কর্মসৃজন প্রকল্পে নন ওয়েজ নামে বরাদ্দকৃত অর্থের কোনো কাজ করা হয়নি। বেরুলী হাটের বিক্রয় লব্ধ অর্থ থেকে ৪৬% অর্থ পেলেও তা পরিষদের কাউকে না জানিয়ে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন তিনি। স্থায়ী সম্পদ বিক্রয়ে লব্ধ অর্থ হতে আনুমানিক ২০ লাখ টাকা, ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স আদায়ের টাকায় কোনো কাজ করা হয়নি। কাবিখা, কাবিটা, টিআর (সাধারণ) ইউনিয়ন পরিষদে এমপির বরাদ্দকৃত কাজ সঠিকভাবে না করা, ২৮৮৬ জনের মধ্যে ১ হাজার জনের কার্ড নিজ আয়ত্বে নিয়ে কার্ডের চাল গোডাউনে রেখে আত্মসাৎ করেন তিনি।
এছাড়া ৩৪৫টি ভিডাব্লিউপি কার্ড, রেশন কার্ড, মাতৃকালীন ভাতার কার্ডে অনিয়ম, সঠিক তথ্য না জানিয়ে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করাসহ নিয়মিত মিটিং না করা, এডিপি/এলজি এসপির অর্থে কোথায় প্রকল্প নেওয়া হয় তা পরিষদকে না জানানো।
বক্তব্যে ওই ইউপি সদস্য আরও বলেন, অভিযোগ দায়ের করার কারণে চেয়ারম্যানের হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এছাড়াও গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে বালিয়াকান্দি থানায় সাধারণ ডায়রির জন্য আবেদন করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ জন সদস্য অনাস্থা প্রদান করেছেন। আশা করছি দ্রুতই কার্যকর হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য সাফিয়া বেগম, মর্জিনা বেগম, সদস্য পলাশ চন্দ্র কর, আবু সাঈদ, আমিনুর রহমান বাবু, কাবিল উদ্দীন, কামরুল ইসলাম, আকরাম হোসেন ও আব্দুল কুদ্দুস।
এ বিষয়ে নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর বলেন, আমি শুনেছি তারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তবে তাদের সঙ্গে কী করেছি যে তারা অনাস্থা দেবে। আমার বিরোধীপক্ষ মেম্বারদের দিয়ে এ কাজ করাচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম অনাস্থাপত্র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, আগের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রুবেলুর রহমান/এফএ/জিকেএস