তৈমূরের সিদ্ধান্তে একমত নয় পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: ১১:১৮ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
বাঁ থেকে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, তার ছোট ভাই মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মেয়ে মার-ই-য়াম খন্দকার, ভাগিনা রশিদুর রহমান রুশো

বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তবে তার এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন তার পরিবারের সদস্যরা। তারা বিবৃতির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছেন। একইসঙ্গে আমৃত্যু পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিএনপির সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত নাজমুল হুদার প্রতিষ্ঠিত দল তৃণমূল বিএনপির প্রথম সম্মেলনের দিন যোগ দেবেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন: শমসের-তৈমূরকে নিয়ে সাজানো হচ্ছে তৃণমূল বিএনপি 

এরই মধ্যে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপিতে যোগদানের ব্যাপারে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, দেড় বছর আগে দল থেকে (বিএনপি) বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপর বিএনপির কেউ একটিবারের জন্য ফোন দিয়ে খোঁজ নেয়নি। কোনো মূল্যায়ন করেনি। এখন আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। নিজের পরিচয় দেওয়ার জন্য তো একটি প্ল্যাটফর্ম দরকার।

নতুন দলে যোগদানের বিষয়ে তৈমূর বলেন, বিএনপি আমাকে দেড় বছর ধরে বহিষ্কার করে রেখেছে। আমি তো দল ছাড়িনি। আমি বিএনপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমার ছোট ভাই (কাউন্সিলর খোরশেদ আলম) ফোন দিয়েছে। মেয়ে ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার অভিমান করে আছে। কিন্তু আমার তো করার কিছু নেই। পরিবারের সবাই বিএনপি করুক। আমি একাই অন্য দল করবো।

আরও পড়ুন: তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে যা বললেন তৈমূর 

এদিকে তৈমূর আলম খন্দকার দল ছাড়ার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তৈমূরের দলত্যাগ নিয়ে বিবৃতি এসেছে মেয়ে ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার, ছোট ভাই মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও ভাগিনা মহানগর কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক রশিদুর রহমান রুশোর পক্ষ থেকে।

তৈমূরের মেয়ে ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) ২০২০-২১ সেশনের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। ভাই মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। ভাগিনা রশিদুর রহমান রুশো এক সময়ে ছাত্রদলের ডাকসাইটে নেতা ছিলেন।

তৈমূরের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে মেয়ে ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার জাগো নিউজকে বলেন, তিনি আমার বাবা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ছিলেন। সে কারণেই তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করেছেন। এটা তার নিজস্ব ব্যাপার। তবে আমি বিএনপির সঙ্গেই আছি। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জাগো নিউজকে বলেন, তৈমূর আলম খন্দকার আমাদের পরিবারের একমাত্র ভরসাস্থল ও নীতি নির্ধারক। তবে তার বর্তমান রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সঙ্গ আমরা একমত নই। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি একটি মহাসমুদ্র। আমৃত্যু আমি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল হয়ে বিএনপিতেই থাকতে চাই।

মহানগর কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক রশিদুর রহমান রুশো জাগো নিউজকে বলেন, তৈমূর আলম খন্দকার আমাদের পরিবারের একমাত্র অভিভাবক। তবে তার বর্তমান রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি একমত নই। আমি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল হয়ে বিএনপিতে আছি এবং আমৃত্যু বিএনপিতেই থাকবো।

তবে এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার জাগো নিউজকে বলেন, আমি আমার পরিবারের সদস্যদের অভিভাবক। তাদের সব সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমার ভূমিকা থাকে। তবে তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমার কোনো ভূমিকা থাকবে না। এটা তাদের ব্যাপার। আমি কখনো তাদের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রভাব খাটাবো না। কিন্তু আমি মনে করি আমার পরিবারের সদস্যদেরও বিএনপি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেনি।


মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।