আর কতদিন অবহেলায় পড়ে থাকবে ধামরাই ট্রমা সেন্টার
দীর্ঘ ১১ বছরেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর হয়নি ঢাকার ধামরাইয়ের ট্রমা সেন্টার ভবনটি। অযত্ন আর অবহেলায় উদ্বোধনের আগেই যা নষ্ট হতে বসেছে। চিঠি চালাচালি ছাড়া কোনো অগ্রগতির তথ্য নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কাছে, যা নিয়ে হতাশ স্থানীয়রা।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির একটি পাশে তিনতলা ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। ভবনের চারপাশের বিভিন্ন জায়গায় খসে পড়ছে সিমেন্টের প্লাস্টার। দেওয়াল জুড়েই জন্ম নিয়েছে নানা উদ্ভিদ। ভেঙে আছে জানালার গ্লাস। একটু আগাতে দেখা গেলো, প্রধান ফটকটিতে ঝুলছে তালা। কেঁচি গেটে মরিচা পড়তে শুরু করেছে। মাকড়শা জাল বুনেছে পুরো ভবনের ভেতরের অংশে। ময়লায় মেঝে যেন উঁচু হয়ে আছে। সুনসান নীরবতা আর অন্ধকারাছন্ন পরিবেশে এ যেন এক ভুতের বাড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৮ সালের মার্চে ৩ তলা বিশিষ্ট ট্রমা সেন্টারের নির্মাণ কাজ শুরু হলেও শেষ হয় ২০১২ সালে। ওই সময়ে সাভার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ঢাকা জেলার সিভিল সার্জনের কাছে ট্রমা সেন্টারটি হস্তান্তর করতে চান। তবে সে সময় ভবনে সোলার প্ল্যান্ট স্থাপন, বৈদ্যুতিক সংযোগ, লিংক করিডোরের কাজ সমাপ্ত না হওয়া, অ্যাপ্রোচ সড়কে কার্পেটিং না থাকাসহ বেশকিছু কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় তা গ্রহণ করেননি সিভিল সার্জন। সিভিল সার্জন অসম্পূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করতে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেন। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি হলেও কাজ শেষ হয়নি। ঝুলে আছে বছরের পর বছর।
এদিকে, ট্রমা সেন্টারটি নিয়ে হতাশ স্থানীয়রা। এক কোটি ৯৩ লাখ টাকা টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটির অবস্থা নিয়ে ওষুধ ব্যবসায়ী ওকিউল্লাহ করিম বলেন, ট্রমা সেন্টারটি চালু না হওয়ায় দারুণ অসুবিধা ভোগ করছে স্থানীয়রা। এক/দুই বছর নয় দীর্ঘ ১১ বছর হলেও এখনো চালু হয়নি ট্রমা সেন্টারটি। আগামীতে কখন চালু হবে তা এখনো অনিশ্চিত। এমন প্রকল্প সরকারের অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই না।
ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নূর রিফফাত আরা বলেন, ভবনটির অসমাপ্ত কাজ শেষ করে আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ তারা নেননি। ট্রমা সেন্টারটির কার্যক্রম শুরু করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ এই এলাকায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো। এছাড়া স্থানীয়রাও উপকৃত হতেন।
অন্যদিকে, এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।
মাহফুজুর রহমান নিপু/এমআরআর/জেআইএম