সিকিমের বাঁধ ভেঙে ভয়ংকর তিস্তা, বন্যার শঙ্কা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৩

অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে উত্তর সিকিমের লোনক হ্রদের বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি নেমে আসছে তিস্তায়। এতে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে তিস্তার পানি। পানি বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন তিস্তাচরের মানুষ। এ কারণে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজের সবকটি জলকপাট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৫টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৩৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ২৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এরআগে দুপুর ২টায় একই পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ মিটার ৯০ সেন্টিমিটার।

jagonews24

তিস্তার পানি বেড়ে জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা ও শৈলমারী ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় হাজার পরিবার।

নদীপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হচ্ছে। তারা এখন বন্যার শঙ্কায় রয়েছেন। এরআগে চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বন্যায় বসতবাড়ি, আবাদি জমি, গবাদি পশুসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

jagonews24

আরও পড়ুন: পানির চাপে খোলা হলো তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট

ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মোবারক আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকালবেলা নদীতে পানি বাড়তে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এমনভাবে পানি বাড়ছে যা বলার বাইরে। মুহূর্তের মধ্যে চরের ধানক্ষেত তলিয়ে গেলো।’

একই উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, একদিনে উজানের ঢল, অন্যদিকে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। উত্তর খড়িবাড়ী গ্রামের প্রতিটি বাড়ি হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

jagonews24

তিস্তানদী পরিদর্শন শেষে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর-ই-আলম সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, উজানে সিকিমের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে প্রবল বেগে উজান থেকে বিপুল পরিমাণে পানি তিস্তা নদী দিয়ে দ্রুত নেমে আসছে। এ অবস্থায় তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাসহ অন্যদের সতর্ক থেকে জানমালসহ নিরাপদ আশ্রয়ের যেতে মাইকিং করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সবাই নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌল্লা জাগো নিউজকে বলেন, উজানে ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তাসহ আশপাশের নদীগুলোতে পানি বাড়ছে। সতর্কতা জারি করে নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।