ভিড় বেড়েছে পুরোনো গরম পোশাকের দোকানে
বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সেই সঙ্গে ভিড় বেড়েছে গরম পোশাকের দোকানে। উচ্চবিত্তরা ঠান্ডা থেকে বাঁচতে গরম কাপড় কিনে শীত নিবারণ করতে পারলেও দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। আবার কেউ ছুটছেন পুরোনো কাপড়ের দোকানে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) জয়পুরহাটের রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও ফুটপাত মার্কেটের পুরোনো পোশাকের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ভিড়।
ব্যবসায়ীরা জানান, পুরোনো হলেও এসব কাপড়ের মান ভালো। বিদেশি কাপড় তুলনামূলক কম দামে পাওয়ায় এখন ধনী-গরীব সবাই কিনছেন। তবে নিম্ন আয়ের মানুষই বেশি কিনে থাকেন এসব কাপড়। দোকানগুলোতে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের শীতের পোশাক। এছাড়াও মাথার টুপি, পায়ের মোজা, হাত মোজা, মাফলার, সোয়েটার, ফুলহাতা গেঞ্জির চাহিদাও বেড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে অস্থায়ী পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় লেগেই থাকছে। কম দামে ভালো মানের গরম কাপড় মেলায় এসব দোকানে বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।
দোকানে আসা জহিরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, শীতের পোশাক কিনতে আমি শো রুমগুলোতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে দাম আমার নাগালের বাইরে। তাই আমি রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের পুরোনো কাপড়ের দোকান থেকে একটি জ্যাকেট কিনতে এসেছি।

ভ্যান চালক বিদ্যুত জাগো নিউজকে বলেন, আমার তো আর সাধ্য নাই বড় বড় মার্কেট থেকে কাপড় কিনব। ঠান্ডা আসলে এখান থেকে কাপড় কিনি। বাড়ির সবাইকে কিনে দেই। তবে এখানে কম দামে কাপড় পাওয়া গেলেও গতবারের তুলনায় বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে পুরোনো কাপড়।
তমা নামে এক নারী ক্রেতা বলেন, প্রথমবারের মতো পুরাতন কাপড়ের দোকানে এসেছি। এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর কাপড়ও রয়েছে। সুপার মার্কেটগুলোতে নতুন কিনলে লাগতো এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। এখানে সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।
ধামইরহাট উপজেলা থেকে পুরাতন পোশাক কিনতে এসেছেন রবিউল আলম। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, শীত আসলে জয়পুহাট রেললাইনের মার্কেট থেকে কাপড় কিনি। দোকানগুলোতে ঘুরছি। যে দোকানে কম দাম পাবো, সেখান থেকেই কিনবো। এ বছর দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছে। আগে ১৫০ টাকাতেই ভালো কাপড় কিনেছিলাম কিন্তু এ বছর ৩০০ টাকাতেও পাচ্ছি না।
হকার্স মার্কেটের কাপড় বিক্রেতা বাচ্চু মণ্ডল বলেন, আমরা ঢাকার বিভিন্ন বাজার থেকে পোশাকের তারতম্য অনুযায়ী বিভিন্ন দরে এ কাপড়গুলো কিনে আনি। ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামে বিক্রি করি। আমার দোকানে সব ধরনের কাপড় পাওয়া যায়। মানুষ চাহিদা মতো তাদের কাপড় কেনে। অনেক গরীব মানুষ আসেন কাপড় কিনতে আমরা এগুলো অনেক কম দামে দিয়ে দেই।

বাবু নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি গরম পোশাকের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি। গত বছর যে সোয়েটার বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, একই সোয়েটার এবার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। একইভাবে জ্যাকেট, ট্রাউজার, কম্বলসহ অন্যান্য গরম পোশাকের দামও বেশি। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে এখন বিক্রি একটু বেড়েছে। তবে একটু দাম বেশি হওয়ায় অনেকে দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন।
তিন সপ্তাহ ধরে জয়পুরহাটে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। অধিকাংশ দিনই সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। জয়পুরহাট জেলার নিকটবর্তী বদলগাছিতে বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এনআইবি/এএসএম