তাপপ্রবাহে ফার্মেসিতে সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণে নতুন সংকট

আব্দুস সালাম আরিফ আব্দুস সালাম আরিফ , জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ০৩:০৩ পিএম, ১৬ মে ২০২৪

তাপপ্রবাহে জীবন রক্ষাকারী উপাদান ওষুধ সংরক্ষণ ও বিপণন নিয়ে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। অধিকাংশ ওষুধ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করার কথা থাকলেও সাম্প্রতিক সময় ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস যেন স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হাতে গোনা দু-একটি ফার্মেসি ছাড়া পটুয়াখালীর অধিকাংশ ওষুধের দোকানেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে দীর্ঘদিন ধরে অধিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ করায় ওষুধের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমানে শিশুদের জন্য সব থেকে বেশি ব্যবহৃত একটি এন্টিবায়োটিক হচ্ছে সেফ-৩। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের সেফিক্সিম গ্রুপের এই ওষুধের নির্দেশিকায় লেখা আছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণ করুন।

একইভাবে ঠান্ডা-কাশি কিংবা অ্যালার্জির জন্য বহুল প্রচলিত ওষুধ ফেক্সো। এই ওষুধের সিরাপের গায়ে লেখা আছে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণ করুন। নবজাতদের জন্য বহুল ব্যবহৃত ওষুধ ফাইটোমেনাজিওন গ্রুপের কে-ওয়ান, যার গায়েও লেখা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণ করতে। এভাবে সব ওষুধের নির্দেশিকায় লেখা রয়েছে কোন ওষুধ কোন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। তবে পটুয়াখালীতে অধিকাংশ দোকানেই সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।

দাবদাহে ফার্মেসিতে সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণে নতুন সংকট

এদিকে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পটুয়াখালী জেলা এবং এর আশপাশের এলাকায় ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। অধিকাংশ ওষুধ যেখানে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণ করার কথা সেখানে এই দীর্ঘ সময় অধিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ফলে ওষুধের গুণগত মানে কী প্রভাব পড়লো সে বিষয়ও ভাবিয়ে তুলছে সচেতন মহলকে।

পটুয়াখালী শহরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি আমার পরিবারের জন্য নিয়মিত ওষুধ কিনি। অবশ্য চেষ্টা করি সুপরিচিত দোকান থেকেই ওষুধ কেনার। আগে চিন্তা করতাম ওষুধে কোনো ভেজাল আছে কি না। তবে এখন নতুন করে ভাবতে হচ্ছে আমি যে ওষুধটি নিচ্ছি সেটি কীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি ওষুধ ব্যবসায়ীদেরও সচেতন করতে হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা নিয়ে কাজ করতে হবে।

দাবদাহে ফার্মেসিতে সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণে নতুন সংকট

পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম কবির হাসান বলেন, সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ ও বিপণনের ব্যবস্থা না করলে ওষুধের গুণগত মান নষ্ট হয়। এ বিষয়ে এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে তা মানুষের জন্য নতুন একটি সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

তবে পটুয়াখালী ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সিকদার কামরুল ইসলাম বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এরইমধ্যে ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশনা জারি করেছে।

এছাড়া ওষুধের দোকানগুলোতে যাতে তাপমাত্রা মাপার মেশিন থাকে সেজন্য বলা হয়েছে। এছাড়া যাদের সম্ভব হয় তারা যেন এখনই এসি সংযোজন করেন এবং যাদের সামর্থ্য নেই তারা যেন ফার্মেসিতে অধিক ফ্যানের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন সুযোগ সৃষ্টি করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখেন।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।