তাপপ্রবাহ

কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরমে নাকাল ছিল রাজধানীবাসী। সূর্যের তেজ সহনশীলতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। বাতাসে জলীয় বাষ্পের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতিতে তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকলেও গরমের অনুভূতি ছিল চরম। শহরের প্রতিটি অলিগলি, রাস্তাঘাট, বাসস্ট্যান্ড বা অফিসপাড়া-সবখানেই মানুষ কষ্ট পাচ্ছিল তীব্র ঘাম, ক্লান্তি আর নিঃশ্বাসবন্ধ করা গরমে। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ নেমে আসা স্বস্তির বৃষ্টিই যেন ছিল প্রকৃতির আশীর্বাদ। লেখা: জান্নাত শ্রাবণী; ছবি: মাহবুব আলম

ঢাকায় আজ সকাল থেকেই রোদের দাপট। সূর্য যেন মাথার ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। বাতাস গরম, নড়লেই যেন গায়ে আগুন লাগে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভ্যাপসা অনুভূতি, যেন ঘামে ভিজে শরীর আর মন দুই-ই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। মানুষ যখন বাড়ির শান্ত কোণ, ছায়া ঘেরা বারান্দা কিংবা এসির শীতল পরশে আশ্রয় নিচ্ছে, তখন রাস্তায় দেখা যায় কিছু ক্লান্ত মুখ-ঘামে ভেজা, রোদে পোড়া, তবুও অদ্ভুত রকমের এক দৃঢ়তায় এগিয়ে চলা। তারা কেউ নামহীন, কেউ হয়তো রফিক, সাইদুল বা হাসান। রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাত্রী পৌঁছে দিয়ে তারা চালিয়ে যায় এই শহরের ছন্দ। নিজের ক্লান্তি, পিপাসা, ব্যথা আর কষ্টকে পেছনে ফেলে যে মানুষগুলো শহরের গতি সচল রাখে, তাদের কথা খুব কমই বলা হয়। এই তীব্র গরমে, যেখানে শহর পালিয়ে যায় ছায়ার খোঁজে, সেখানে তারাই রয়ে যায় রাস্তায়। লেখা: জান্নাত শ্রাবণী; ছবি: মাহবুব আলম

গরম, হুড়োহুড়ি আর গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যাকুলতা, সব মিলিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন যেন ঈদযাত্রার এক জীবন্ত দৃশ্যপট। ঠিক এমন ভিড় আর কোলাহলের মাঝেই হঠাৎ দেখা মিললো রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের। ছবি: অভিজিৎ রায়

ঘড়ির কাঁটা দুপুর ১২টা ছুঁতেই ঢাকার রাজপথ যেন আগুনে ফেটে পড়ে। হাঁসফাঁস করা শহরজুড়ে ছায়া নেই, বাতাস নেই। কর্মব্যস্ত মানুষজন প্রয়োজনের তাগিদে রোদে ঘাম ঝরাচ্ছেন, কেউ অফিসে যাচ্ছেন, কেউবা বের হয়েছেন জরুরি কাজে। তবে সবার চোখে-মুখে একটাই অভিব্যক্তি, এই গরম আর সহ্য হচ্ছে না। ছবি: মাহবুব আলম

প্রচণ্ড গরমে যেন দমবন্ধ হয়ে আসছে প্রকৃতির। বাতাসে যেন আগুনের হলকা বইছে। রোদের ঝলসে যাওয়া দিনে শহর আর গ্রামের রাস্তাঘাট হয়ে উঠেছে ফাঁকা। তবে এই খরতাপে একদল দুরন্ত কিশোরের প্রাণের উচ্ছ্বাস যেন অন্য এক চিত্র এঁকে দেয়। কাছের পুকুরে তাদের দৌড়ঝাঁপ আর জলকেলিতে জেগে ওঠে জীবনের মিষ্টি স্পন্দন। ছবি: মাহবুব আলম

তীব্র তাপপ্রবাহের পর বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। একই সঙ্গে প্রাণ ফিরে পেয়েছে প্রকৃতি। 

রাজধানী ঢাকাতে বইছে তীব্র তাপ প্রবাহ। বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে অস্বস্তি বিরাজ করছে। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষরা।

রাজধানীতে রোদের তেমন তাপ না থাকলে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ সবাই। 

তীব্র তাপপ্রবাহ ও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ নগরবাসী। পেটের দায়ে গরম উপেক্ষা করেই কাজে বের হতে হচ্ছে খেটে-খাওয়া মানুষদের। 

টানা তাপপ্রবাহ ও শিলাবৃষ্টিতে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। লিচুর ফুল ও মুকুল ঝরে পড়ায় আশানুরূপ ফল আসেনি। তাছাড়া লিচুর আকার ছোট হয়ে গেছে। 

দেশে চলমান তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে এবার লিচুর আকার অপেক্ষাকৃত ছোট হয়েছে। এছাড়া ফেটে যাওয়াসহ পোড়া ক্ষত দেখা যাচ্ছে লিচুর গায়ে।

তীব্র এই তাপপ্রবাহের মধ্যেই পাকতে শুরু করেছে আম, কাঁঠাল, লিচুসহ গ্রীষ্মের সব ফল।

সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত রাঙ্গামাটির কৃষক কৃষাণীরা। তীব্র তাপপ্রদাহকে উপেক্ষা করেই ধান কাটছেন তারা।  

প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ থেকে একটু স্বস্তি পেতে চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনা বড়স্টেশনে ভিড় করছেন মানুষজন। 

টানা তাপপ্রবাহেও নিস্তার নেই জনজীবনে। আর তীব্র এই গরমে সবচেয়ে কষ্টে আছেন এই শ্রমজীবী মানুষেরা। এমন ভয়াবহ গরমে কাজ করতে গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে তাদের। 

বায়ুদূষণ রোধ ও তীব্র তাপদাহে শহরকে ঠান্ডা রাখতে নগরীতে স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ ব্যবস্থা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

ফরিদপুরে প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। কাঠফাটা রোদে পথ-ঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। এ অবস্থায় চরম পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ছে পথচারীরা। তবে পথচারীরা তীব্র দাবদাহে কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন বরফগলা নানা প্রকারের শরবতে।

গত কয়েকদিন ধরে দেশে বেড়েই চলেছে তীব্র তাপমাত্রা। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে জনজীবন। অস্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং অসহ্য গরমের ফলে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।

পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রচণ্ড খরা ও তাপদাহে লিচুর গুটি ঝরে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে ও সেচ দিয়েও গুটি ঝরা রোধ করা যাচ্ছে না। প্রতিটি গাছের ৪০-৫০ ভাগ গুটি ঝরে গেছে। ফলে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

দেশজুড়ে চলা তাপপ্রবাহের কারণে স্কুল-কলেজের সাত দিনের ছুটি চলছে। অন্যদিকে এই সুযোগে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছেন অনেকেই।

তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়ছে জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। 

তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন এলাকাবাসী। 

বৈশাখের খরতাপে দেশব্যাপী বাড়ছে গরমের তীব্রতা। পর্যটন জেলা কক্সবাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সুপেয় পানির সংকট। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের পাশাপাশি অতিমাত্রায় ভূ-গর্ভের পানি উত্তোলনে কক্সবাজারে দিন দিন পানির স্তর নিচে নামছে।

দেশজুড়ে চলা তাপপ্রবাহের কারণে স্কুল-কলেজের সাত দিনের ছুটি চলছে। 

সারাদেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। ব্যতিক্রম নয় রাজধানী ঢাকাও। বাতাসের সঙ্গে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। 

দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে, সঙ্গে বাড়ছে গরমও। আজ রাজধানীর তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতি মুহূর্তে ঘটছে কত রকম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সেসব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের আলোচিত ছবি।