অজ্ঞাত পরিচয়ে বসবাস

৪০ বছর পর নেপালে ফিরে গেলেন বীর বাহাদুর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৯:৪১ এএম, ২৪ মে ২০২৪

অজ্ঞাত পরিচয়ে বাংলাদেশে বসবাসের প্রায় ৪০ বছর পর নিজ দেশে ফিরে গেলেন বীর বাহাদুর রায় নামে এক নেপালি নাগরিক। মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় পথ ভুলে প্রায় ৪০ বছর আগে ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। ১০ বছর দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রায় ৩০ বছর যাবত বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার অলক বসাকের চাতালে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। ৪০ বছর পর ষাটোর্ধ্ব বীর বাহাদুরের পরিচয় শনাক্ত হলে অবশেষে পরিবারের কাছে ফিরে যান।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতের ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন হয়ে নিজ দেশে ফিরে যান বীর বাহাদুর।

৪০ বছর পর নেপালে ফিরে গেলেন বীর বাহাদুর

এসময় তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি, নেপালের দূতাবাসের উপ-রাষ্ট্রদূত মিস ললিতা সিলওয়াল, দ্বিতীয় সচিব মিস ইয়োজানা বামজান, বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমৃত অধিকারী, বীর বাহাদুরের ভাতিজা রাজন রায়সহ পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, নেপালের গোরখে বাঙ্গিনা এলাকার অধীর চন্দ্র রায়ের ছেলে বীর বাহাদুর সেসময় মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। কিভাবে তিনি নেপাল থেকে বাংলাদেশ আসেন তা কেউ বলতে পারেননি। তাকে নিয়ে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার স্থানীয়দের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে নেপালে তার পরিচয় শনাক্ত হয়। এরপর উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে যোগাযোগের পর সর্বশেষ ১৬ মে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে নেপালি নাগরিক বীর বাহাদুরকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুমতি এবং আইনি প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার তাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

৪০ বছর পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। দীর্ঘদিন পর স্বজনদের কাছে পেয়ে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নেপালী নাগরিক বীর বাহাদুর রায়।

বীর বাহাদুরের ভাতিজা রাজন রায় বলেন, আমরা খুব কৃতজ্ঞ বাংলাদেশের মানুষ ও প্রশাসনের প্রতি। আমার কাকাকে তারা পরম যত্নে রেখেছিলেন।

৪০ বছর পর নেপালে ফিরে গেলেন বীর বাহাদুর

নেপালি দূতাবাসের অ্যাম্বাসেডর রিয়া ছেত্রী বলেন, আমরা বীর বাহাদুরের পরিবারের পক্ষ থেকে জেনেছি তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। একটি ভিডিওতে দেখে তার ভাবি চিনতে পারেন। এরপর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে পথ ভুলে বীর বাহাদুর রায় বাংলাদেশে আসেন। তার এ অবস্থানকালে কোনো প্রকার মামলা কিংবা বিরুপ কোনো তথ্য না পাওয়ায় স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুমতি পাওয়া যায়। উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় তাকে স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।।

সফিকুল আলম/এএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।